নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সাথে সংঘর্ষ ও গুলিতে নিহত স্কুল ছাত্র মারুফ হত্যায় এমপি-মন্ত্রীসহ জেলা আওয়ামী লীগের ৫৬ জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই হত্যা মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে।
এছাড়া এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৫০-২০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
আরো পড়ুন – ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরণের রাজনীতি নিষিদ্ধ
রোববার (১৮ আগষ্ট) রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় মারুফের মা মোছা: মোর্শেদা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
কিন্তু মামলায় ঘাটাইলের আমানুর রহমান রানা ও কালিহাতীর আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর নাম দেয়া হয়নি।
মামলার এজাহারে উল্লেখ –
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর টাঙ্গাইল শহরে বিজয় মিছিল বের করা হয়।
ওই মিছিলে শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফ মিয়া অংশগ্রহণ করে।
মিছিলটি শহরের মদের মোড় এলাকায় গেলে আসামীরা বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ছত্রভঙ্গ করে।
এসময় স্কুল শিক্ষার্থী মারুফ প্রাণ বাঁচাতে শহরের সিটি ব্যাংকের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখান গিয়ে আসামী গুলি করলে সে লুটিয়ে পড়ে।
পরে তাকে মিছিলের শিক্ষার্থীরা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্কুল শিক্ষার্থী হত্যা মামলার প্রধান আসামী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল ইসলাম আলমগীর, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির, তার ভাই শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনির, সাবেক বানিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, সাবেক এমপি হাসান ইমান খান সোহেল হাজারী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল, টাঙ্গাইল সদর আসনের সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক এমপি জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, মির্জাপুর আসনের সাবেক এমপি খান আহম্মেদ শুভ, টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদ, সাবেক পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও টাঙ্গাইলের বিবেকানন্দ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আনন্দ মোহন দে।
আরো পড়ুন – পাথরাইল স্কুলের প্রধান শিক্ষক দ্বীনবন্ধু এবং সভাপতি বড়মনির অপসারণ দাবি
এছাড়া যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, জেলা যুবলীগের সভাপতি মাসুদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আবু সাইম বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেনসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া আরো ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য –
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন বলেন, স্কুল শিক্ষার্থী মারুফের মা বাদী হয়ে সাবেক এমপি মন্ত্রীসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।