আদালত প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৪০ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইল চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান নূর তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এরা সবাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. নাছির ও মো. পিয়াসের উপর হামলার মামলার আসামি।
আরো পড়ুন – দলীয় মনোনয়ন পেতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নগদা শিমলা ইউনিয়ন বিএনপি একটি মিছিল বের করে।
মিছিলটি পাগলা বাজার এলাকায় পৌঁছলে সেখানে নগদা শিমলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক মো. নাছির ও হাদিরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. পিয়াসের উপর হামলা ঘটনা ঘটে।
এতে তারা দুইজন গুরুতর আহত হন। এসময় তাদের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়।
ঘটনার পর ২ সেপ্টেম্বর নাছির উদ্দিন বাদি হয়ে গোপালপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ওমরাও খান দিপু জানান, মামলার আসামিরা গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন লাভ করেন।
চার সপ্তাহ পর তাদের নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার ৪০ জন টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে তাদের টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
যাদের কারাগারে পাঠানো হয় –
কারাগারে পাঠানো নেতাকর্মীরা হলেন- নগদা শিমলা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি কিসলু মিয়া, সহ-সভাপতি মহর আলী, যুগ্ম-সম্পাদক খাইরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক আব্দুল আজিজ, সদস্য মেছের আলী, দেলোয়ার হোসেন, আলমগীর হোসেন, আরশেদ আলী, জাফর আলী, রফিকুল ইসলাম, বাবুল ফকির, সোহরাব হোসেন।
আরো পড়ুন – বড় মনির নন, তাহলে কে এই শিশুটির পিতা?
১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ।
৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গোলজার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন।
৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আফজাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক লাবু মিয়া।
৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি তোয়াজ আলী, সাধারণ সম্পাদক খালেক খাঁ।
৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এখলাছুর রহমান।
৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাবিবুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক মোজাম্মেল ফকির।
ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক মঞ্জুরুল ইসলাম, সদস্য সচিব হারুন অর রশিদ ও সদস্য লাভলু মিয়া, মনি।
নগদা শিমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহবায়ক আইয়ুব খান।
ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আলম খান, যুগ্ম-আহবায়ক আব্দুল লতিফ।
১ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বাবুল হোসেন। ৩ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. রবিউল, ৪ নং ওয়ার্ডের সভাপতি আব্বাস আলী।
ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম-আহবায়ক মফিজুল হক; ৬ নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি সোনা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আয়নাল মিয়া ও শ্রমিক নেতা শেখ ফরিদ।
২ নং ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি কামাল হোসেন ও উপজেলা জিয়া মঞ্চের আহবাক বাদল মিয়া।
দুই দলের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য –
নগদা শিমলা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী ওরফে সাগর জানান, ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতার উপর হামলার ঘটনায় বিএনপি বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোন নেতাকর্মী জড়িত নয়।
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের মামলায় জড়ানো হয়েছে।
আরো পড়ুন – নিজ আসনের দলীয় অখন্ডতা ধরে রাখতে পারেন নি কৃষিমন্ত্রী
নগদা শিমলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান সোহেল জানান, হত্যার উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. নাছির ও পিয়াসের উপর বিএনপির মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়েছিলো।
তারা ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করে। এখনও বাসায় থেকে তাদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর গোপালপুর থানায় একটি গায়েবী ও মিথ্যা মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছিলেন ওই নেতাকর্মীরা।
চার সপ্তাহ পর তাদের বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন।
কিন্তু আজ বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, একতরফা নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগ নানান ষড়যন্ত্র করছে। তার অংশ হিসেবে গোপালপুরের বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী ও মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।