নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল শহরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ডাক্তারের পরিবর্তে নার্স দিয়ে ডেলিভারি করানোর সময় ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির যৌনাঙ্গ ছিড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
এতে করে ওই প্রসূতি অবস্থা আরো অবনতি হয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শিশুর অবস্থাও ভাল নয়।
এ ঘটনায় সুষ্ঠ বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রসূতির স্বামী দেলদুয়ার উপজেলার চিনাখোলা গ্রামের মো. মহসিন মিয়া।
লিখিত অভিযোগে যা বলা হয়েছে –
মহসিন মিয়া জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রোববার তার স্ত্রী তাছলিমা আক্তারের প্রসব ব্যথা উঠলে রাত সাড়ে ৯টায় ডা. আখতার জাহানের অধীনে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু সময় হওয়ার আগেই ওই দুই নার্স জোর পূর্বক তার স্ত্রীর ডেলেভারি করিয়ে এক পুত্র সন্তান প্রসব করে।
কিন্তু তাদের কাটাকাটি করার অনুরোধ জানালেও তার পরেও কেটে তার স্ত্রীর জরায়ু, পায়খানা ও প্রসাবের রাস্তা পুরোটাই কেটে এক করে সেলাই করে।
পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর ডা. আখতার জাহানকে না দেখিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা শাহনাজ আক্তার শিল্পী ১৩শ’ টাকা নিয়ে তাদের ছুটি দেয়।
৫ দিন বাড়িতে থাকার পর ২৫ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীর প্রসাবের রাস্তা দিয়ে পায়খানা বের হতে থাকে।
পরে ওই দিন পুনরায় তাকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর ডাক্তার আখতার জাহানকে দেখাতে চাইলে নার্স হাফিজা ও সেলিনা দেখাতে বাঁধা দেয়।
পরে আখতার জাহানের ব্যক্তিগত চেম্বারে দেখা করেন। তার পরামর্শে আরো চারদিন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে রাখা হয়।
ডাক্তার আখতার জাহানের অনুমতি ছাড়া ওই দুই নার্স তার স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে হাত দিয়ে তার যৌনাঙ্গ ছিড়ে ফেলে।
এরপর তার স্ত্রীর প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে পরে সেলাই করে দেয়; বিষয়টি আখতার জাহানকে জানালে তিনি স্বীকার করেন যে, নার্সরা ভুল করেছে।
২৭ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় যেতে বলেন। তার স্ত্রীর অবস্থা ভাল না হওয়ায় তারা বাসায় যেতে চান না।
পরে ডাক্তার আখতার জাহানের কাছ থেকে রেফার্ড নিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তবে তার স্ত্রীর অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে; সব খাবার যৌনাঙ্গ দিয়ে বের হয়ে যায়।
এতে দিন দিন তার স্ত্রীর অবস্থা আরো অবনতি হচ্ছে। তার শিশুটির অবস্থাও ভাল না।
মহসিন মিয়া বলেন, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের ডাক্তার সরকারি বেতন নিলেও তেমন দায়িত্ব পালন করেন না।
তিনি ব্যক্তিগত চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নার্স দিয়ে কাজ করায়। ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ।
সরকারি হাসপাতাল হলেও বাহির থেকে যাবতীয় ঔষধ কিনতে হয়। এর সঠিক বিচার দাবি করছি।
ডাক্তারের বক্তব্য –
এ বিষয়ে ডাক্তার আখতার জাহান বলেন, নরমাল ডেলিভারী নার্সরাই সাধারনত করিয়ে থাকে।
তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া আছে। আমি শুধু তত্ত্ববধান করে থাকি; কিন্তু তাছলিমা আক্তার যে অবস্থায় তাকে তিন মাসের আগে কোন চিকিৎসা দেয়া যাবে না।
তার অবস্থা যতই অবনতি হোক না কেন তিন মাসের তাকে কোন চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। সম্পাদনা – অলক কুমার