টাঙ্গাইলে পোষা প্রাণীসহ বিড়াল, ইঁদুর, শেয়াল ও কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ ধরনের ক্ষেত্রে র্যাবিস টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে চলছে তীব্র টিকা সংকট। ফলে রোগীদের বাইরে থেকে উঁচুদামে টিকা কিনতে বাধ্য হতে হচ্ছে। নিম্নবিত্ত অনেক রোগী টিকা কিনতে না পারায় ঝুঁকির মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন।
২৫০ শয্যার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রতি মাসেই র্যাবিস ভ্যাকসিনের ঘাটতি দেখা যায়। পাশাপাশি প্রায় এক বছর ধরে সরকারিভাবে আরআইজি (ইমিউনোগ্লোবুলিন) টিকার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে আর্থিকভাবে দুর্বল রোগীদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী জলাতঙ্কের টিকা নিতে হাসপাতালে আসেন। কিন্তু টিকা সংকটের কারণে রোগীরা বিপাকে পড়েন এবং বাধ্য হয়ে বাহিরের ফার্মেসি থেকে বেশি দামে টিকা সংগ্রহ করেন। একটি ভ্যাকসিনের জন্য ৪৭০ থেকে ৫০০ টাকা, আর প্রতিটি র্যাবিস ডোজের জন্য ১২০ থেকে ১২৫ টাকা খরচ হয়। তিন ডোজে মোট ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ৩৬০ থেকে ৩৭৫ টাকা। আর ওজন অনুযায়ী আরআইজি নিতে একজন রোগীর ৮২০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত লাগছে।
সরকারিভাবে টিকা সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ফার্মেসিগুলোতে টিকা পাওয়া যায়, তবে সেখানেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দ্বিগুণ দাম নেওয়া হচ্ছে। অনেক রোগী হাসপাতাল এসে টিকা না পেয়ে পরে সমস্যায় পড়েন। হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, বাইরে থেকে টিকা আনতে হয়—এ তথ্য রোগীকে আগেই জানানো হয় যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তারা জানিয়েছে, সারাদেশেই র্যাবিস ভ্যাকসিন সংকট চলছে। চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও বরাদ্দ খুব কম পাওয়া যায়। মাত্র ৩০০–৪০০ ডোজ সরবরাহে দুই দিনও টিকা সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না।
একই পরিস্থিতি জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও দেখা যাচ্ছে। বিড়াল, শেয়াল, ইঁদুর বা কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা সেখানে গেলেও জলাতঙ্ক প্রতিষেধকের কোনো ব্যবস্থা নেই—এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের।











