নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের ওপর সভাপতি গ্রুপের হামলার অভিযোগ উঠেছে।
এসময় এক সমর্থককে তিনতলার ছাদ থেকে ফেলে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনায় ঘটে।
আহতরা হলেন, বিএনবি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহান, আইসিটি বিভাগের জয় ধর, কেমেষ্ট্রি বিভাগের সজিব শেখ, অর্থনীতি বিভাগের সৌরভ, মিনার, নাঈম রাজ, আইসিটি বিভাগের সৌরভ, টেক্সটাইল বিভাগের তামীম।
আরো পড়ুন – সাবেক কৃষিমন্ত্রীর আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে কৃষি জমি দখল ও মাটি ভরাটের অভিযোগ
এদের মধ্যে সোহানকে তিনতলার ছাদ থেকে ফেলে ও বাকিদের দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
আহতদের টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এরমধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
আহতরা জানান, রাতের খাবার খেয়ে তারা জননেতা আব্দুল মান্নান হলের ছাদে বসে গল্প করছিলেন।
এমন সময় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীলের অনুসারী সাফি মোরসালিন, আবিদ, রকি, ছাত্রদল সমর্থিত ইদ্রিস, রবিউল, রুবেল, বিশ্বজিৎ, অপু এর নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
এসময় সোহানকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলা দেয়া হয়।
এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আহত সোহানকে হাসপাতালে পাঠানো হলে ডাক্তার জানান, তার কোমর ভেঙে যায় ও দুই পায়ের হাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে।
পরে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এছাড়া পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের রকি গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাকিদের টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এসময় পুলিশ জননেতা আব্দুল মান্নান হলে তল্লাশী চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীল ও তার অনুসারীদের কক্ষ থেকে অন্তত ২০টি লোহার রড, দুইটি চাপাতি উদ্ধার করে।
ছাত্রলীগ নেতাদের কথা –
ঘটনা প্রসঙ্গে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর রাখতে সপ্তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবী করেন তিনি।
ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীল ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন।
এসময় তিনি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান।
পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কথা –
এই বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুভূতি সাপেক্ষে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেই।
এই বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি, মামলা পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার পর জননেতা আব্দুল মান্নান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড.আশরাফ হোসাইন তালুকদার জানান, ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।