বর্তমানে ডায়াবেটিস বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি অন্যতম জটিল ও ভয়ংকর রোগে পরিণত হয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরের কিডনি, চোখ, নার্ভসহ বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়মিত জীবনযাপনই মূলত ডায়াবেটিস বৃদ্ধির পেছনে দায়ী। সচেতন মানুষ এখন খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনছেন, তবে তেতো জাতীয় খাবার নিয়ে অনেকের মনে কিছু ভুল ধারণা কাজ করছে।
📌 তেতো খেলে কি সুগার কমে? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, করলা, উচ্ছে, মেথি, নিমের মতো তেতো জাতীয় খাবার রক্তে সুগার কমাতে সহায়তা করে—এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। তবে শুধু তেতো জাতীয় খাবার খেলেই ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কারণ রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের সঠিক উৎপাদন ও কার্যকারিতা জরুরি। ইনসুলিন হরমোনে কোনো গড়বড় হলেই টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তেতো খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুটা কমে, তবে কার্যকরী ফল পেতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে করলা বা উচ্ছে খেতে হবে—যা বাস্তবে সম্ভব নয়। তাই ওষুধ ও তেতো জাতীয় খাবার একসঙ্গে খাওয়াই উত্তম উপায়।
📌 কাঁচা করলা নয়!অনেকে কাঁচা করলা বা উচ্ছে খেয়ে দ্রুত ফল পেতে চান। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, কাঁচা তেতো খাবার হজমে সমস্যা ও ইনফেকশন তৈরি করতে পারে। তাই সবসময় রান্না করে খেতে হবে।
📌 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কী করবেন? পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন—
✔️ ভাত, রুটির মতো সরল কার্ব কমিয়ে ওটস, ডালিয়া খেতে হবে।
✔️ বাইরের ফাস্টফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
✔️ মিষ্টি খাওয়া সীমিত করতে হবে।
✔️ প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম বাধ্যতামূলক।
তেতো জাতীয় খাবার খাবেন, ওষুধ খাবেন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম—এই তিন মিলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।