দীর্ঘ মেয়াদী বন্যার পরও টাঙ্গাইলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘমেয়াদী বন্যার পরও টাঙ্গাইলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষক।

টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার আবাদের মাঠে এখন হলুদের সমারোহ। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। চারিদিকে সরিষা গাছের হলুদ ফুলের সমারোহ শোভা পাচ্ছে। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ।

সরিষার ফুলে আকৃষ্ট মৌমাছি; তারা ব্যস্ত মধু আহরণে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে ওঠেছে গোটা মাঠ। হলুদ রঙের চাঁদরে আবৃত টাঙ্গাইল জেলার সরিষা চাষিরা কাঙ্খিত ফলন পাওয়ার আশা করেছেন।

টাঙ্গাইলে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে যেন সবুজের ফাঁকে হলুদের সমাহার। মাঠের পর মাঠ হলুদ পরিপূর্ণ।

কখনো কখনো সরিষার ক্ষেতে বসছে পোকাখাদক বুলবুলি ও শালিকের ঝাঁক। শীতের কুয়াশাকে উপেক্ষা করে চাষিরা সরিষা ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন। এখন সরিষা ঘরে তোলার অপেক্ষা করছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় –

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় এবার উফশী জাতের ২১ হাজার ২১৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ২৪ হাজার ৪৪৫ হেক্টর; মোট ৪৫ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।

ফলনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭ হাজার ৯৬৮ মেট্রিকটন।

এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৩০ হেক্টর; বাসাইলে ৪ হাজার ৮২০হেক্টর; কালিহাতীতে ৩ হাজার ১৩০ হেক্টর; ঘাটাইলে ২ হাজার ৩৫২ হেক্টর; নাগরপুরে ১০ হাজার ৭৫ হেক্টর; মির্জাপুরে ৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর; মধুপুরে ৪৬২ হেক্টর; ভূঞাপুরে ১ হাজার ৮৩০ হেক্টর; গোপালপুরে ৩ হাজার ৬০ হেক্টর; সখীপুরে ২ হাজার ১৪০ হেক্টর; দেলদুয়ারে ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর এবং ধনবাড়ী উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।

জেলায় গত বছর ৪১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছিল। গত বছরের চেয়ে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।

কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের আশা –

কৃষকরা জানান, এবার সরিষা ক্ষেতে ভালো ফুল ফুটেছে বিধায় ভালো ফলনও আশা করা যায়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছেন কৃষকরা।

আমন ধান ওঠার পর বোরো ধান লাগানোর আগ পর্যন্ত জমি ফাঁকা থাকে। তাই শাক-সবজির পাশাপাশি তারা সরিষার আবাদ করে থাকেন। প্রতি বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা; ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় প্রায় ৬ মণ সরিষা উৎপাদিত হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার জানান, সরিষা একটি লাভজনক ফসল; মাত্র ৭০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়।

সরকারি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদেরকে এক বিঘা জমির জন্য সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। চাষীদের সহায়তায় মাঠকর্মীরা সব সময় ক্ষেতের খোঁজ-খবর রাখছেন।

তিনি জানান, বেশ কয়েকদিন যাবত কুয়াশা দেখা গেলেও কোথাও সরিষা ক্ষেতে কোন সমস্যা দেখা যায়নি।

গত বছরের মতো এবারও সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা। সম্পাদনা – অলক কুমার