বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে অবস্থানরত ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ঢাকা ত্যাগ করতে পারলেও তারা ‘টিকিট পাচ্ছেন না’। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ণ চিকিৎসকসহ ৭৮১ জন ছাত্রী রয়েছে। এরমধ্যে বিদেশি ১৭০ জনসহ ৬৫৯ জন ছাত্রী বাড়ি ফিরতে পারলেও ভারত, কাশ্মীর ও নেপালের ১২২ জন ছাত্রী কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার প্রতিষ্ঠিত কুমুদিনী হাসপাতালটি নাতী রাজীব প্রসাদ সাহা ২০০১ সালে কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেন। ঢাকা থেকে ৬৪ কিলোমিটার উত্তরে টাঙ্গাইল জেলা সদরের ২৮ কিলোমিটার দক্ষিণে মির্জাপুর উপজেলার লৌহজং নদীর তীর ঘেষে কলেজটির অবস্থান। কলেজটিতে বর্তমানে এমবিবিএস কোর্সে ইন্টার্ণসহ ৬৮৪ এবং বিডিএস কোর্সে ৯৭ জন ছাত্রী রয়েছে।
এরমধ্যে বাংলাদেশের ৪৮৯, ভারতীয় ও কাশ্মীরি ২৭৩ জন ও নেপালের ১৯ জন। সারাদেশে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সরকার ৩০ মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন। এরপর থেকে বাংলাদেশের ছাত্রীরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরলেও বিদেশি শিক্ষার্থীরা দেশে ফেরার অপেক্ষায় থাকেন।
এরমধ্যে ইন্টার্ণসহ ১৭০ জন বিদেশি ছাত্রী দেশে ফিরতে পারলেও ভারত, কাশ্মীর ও নেপালের ১২২ জন ছাত্রী টিকিট না পাওয়ায় দেশে ফিরতে পারছেন না বলে কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ সূত্র জানিয়েছেন। বাংলাদেশে পড়তে আসা কাশ্মীরের এক ছাত্রী গত ১১ মে শ্রীনগরের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে ইমেইলে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন। এরপর সোমবার কাশ্মীর অবজারভার এবং কাশ্মীর ওয়াচে খবরটি প্রকাশিত হয়।
ইমেইলে এক ছাত্রী লিখেছেন, ‘আমি আপনাকে আমাদের অসহায়ত্বের বিষয়টি অবগত করতে চাই। বাংলাদেশের কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজে আমরা পড়ে আছি। ঢাকা থেকে শ্রীনগরসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ফ্লাইট গেলেও ফেরার টিকিট দিতে আমাদের অবহেলা করা হচ্ছে। দয়া করে আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করে সরকারের কাছে খবরটি পৌঁছাতে সাহায্য করবেন। করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সবাই ফেরার অপেক্ষায়।’
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অফিসার ইনচার্জ রতন চন্দ্র সরকার জানান, কলেজের হোস্টেলে ইন্টার্ণসহ ভারতীয় ৪২ জন, কাশ্মীরি ৬১ জন ও নেপালের ১৯ জন ছাত্রী অবস্থান করছে। তাদের কয়েকজন বাদে সবাই দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে নিজ দেশে ফিরে যাবে বলে তিনি জানান।
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাক্তার মো. আব্দুল হালিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরতে ভারতীয় দুতাবাসে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে। পর্যায়ক্রমে তাদের দেশে নেয়া হচ্ছে। আমাদের কলেজের ছাত্রীদেরও পর্যায়ক্রমে নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।