টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যা করেছে স্ত্রী। পুলিশ স্ত্রীসহ পরকীয়া প্রেমিককে আটক করেছে । শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পাথালিয়া এলাকা থেকে স্ত্রী সাথী খাতুন ও প্রেমিক উজ্জলকে আটক করেছে কালিহাতী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত তোফাজ্জল হোসেন তোতার ছোট ভাই তারা মিয়া বাদী হয়ে নিহতের স্ত্রী সাথী খাতুন(৩১) ও পাথালিয়া গ্রামের সেকান্দর আলীর ছেলে পরকীয়া প্রেমিক উজ্জল(২৯) এবং একই গ্রামের মৃত নাসিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল (৪৫)কে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহতের স্ত্রী সাথী খাতুনের সাথে উজ্জল পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলে অবৈধ মেলামেশা করে আসছিল। বিষয়টি তোফাজ্জল হোসেন তোতা জানার পর উভয়কেই বাধা নিষেধ করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ ডিসেম্বর সকালে রাজমিস্ত্রির কাজ করার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হয়ে বাড়ীতে ফেরত আসে নাই উল্লেখ করে সাথী খাতুন ২০ ডিসেম্বর কালিহাতী থানায় একটি নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারন ডায়েরী করেন। এ খবর শুনে তোতার স্বজনরা অনেক খোঁজাখুজি করে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে জানতে পারে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাথালিয়া বাজারে ঘুরাফেরা করে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে তোতা।
এদিকে আসামী জলিলের বাড়ীর পাশে তোতার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়। ওইদিন দুপুরে ওই গ্রামের মোকছেদ আলী তার বাড়ীর পূর্ব পাশে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের মাটির পাট ভাঙ্গা এবং স্ল্যাপ পরিবর্তন করা। বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারকে জানায় এবং কে বা কাহারা ভেঙ্গেছে বলাবলি করতে থাকে। তোতার নিখোঁজ সংক্রান্তে খোঁজাখুজি করতে থাকাবস্থায় উল্লেখিত বিষয়টি এলাকার লোকজনদের সন্দেহ হলে কালিহাতী থানা পুলিশকে খবর দেয়।
পরে ২১ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেপটিক ট্যাংক থেকে একটি লাশ উদ্ধার করে। লাশটি দেখে স্থানীয় লোকজন নিখোঁজ তোতার লাশ বলে সনাক্ত করেন। এ ঘটনায় শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পাথালিয়া এলাকা থেকে স্ত্রী সাথী খাতুন ও প্রেমিক উজ্জলকে আটক করেছে কালিহাতী থানা পুলিশ।
কালিহাতী থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, তোফাজ্জল হোসেন তোতা রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিখোঁজ হয়। সেই প্রেক্ষিতে তার স্ত্রী থানায় এসে প্রথমে একটি ডায়েরী করে। সেই ডায়েরীর সূত্রধরে তোতা মিয়াকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাই। একপর্যায়ে জানতে পারি তার স্ত্রীসহ পরকীয়ার প্রেমিক উজ্জল দুজন মিলে তোতাকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য পাশ্ববর্তী এক পরিত্যক্ত বাড়ীর সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে ফেলে রাখে। সেই সূত্রধরে সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করি। এ ঘটনায় নিহত তোফাজ্জল হোসেন তোতার ছোট ভাই তারা মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে ঘটনার সাথে জড়িত তোতার স্ত্রীসহ পরকীয়ার প্রেমিক উজ্জলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এরপর তারা দুইজন রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন কুমার কর্মকার এর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।