ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ সফর দুই দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে।
রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের ফাঁকে সোমবার স্থানীয় সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন লুলা। বৈঠকে তারা সামাজিক ব্যবসা, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং দারিদ্র্য মোকাবিলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস প্রেসিডেন্ট লুলাকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। লুলা আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বলেন, “আমি আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ সফর করব।” তিনি উল্লেখ করেন, ব্রাজিল তার নাগরিকদের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে ভাগ করতে চায় এবং সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে আগ্রহী।
দুই নেতা বৈঠকে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস—বিশেষত টিকা পেটেন্টমুক্ত ও সাশ্রয়ী করার উদ্যোগ—এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পদক্ষেপ নিয়েও সহযোগিতার সুযোগ আলোচনা করেন। এছাড়া ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশের তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত আন্দোলনের প্রসঙ্গও উঠে আসে।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস তার ব্রাজিল সফরের স্মৃতিচারণ করেন, যেখানে ২০০৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে দেশের বিভিন্ন শহর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা ভাগ করেন।
প্রেসিডেন্ট লুলা অধ্যাপক ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানান আগামী বছর অ্যামাজন অঞ্চলে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন COP30-এ যোগ দেওয়ার জন্য। তবে অধ্যাপক ইউনূস জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতির কারণে হয়তো তিনি অংশ নিতে পারবেন না। দুই নেতা বৈঠকে ফুটবলকেও বৈশ্বিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন। অধ্যাপক ইউনূস হাস্যরসের সুরে বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামেই মানুষ ব্রাজিলকে সমর্থন করে।”
বৈঠকে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং ব্রাজিলের কয়েকজন মন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।