নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে বৃহস্পতিবার আটক করেছে পুলিশ।
আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে বিকেলে টাঙ্গাইল আদালত এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
পরে তাকে টাঙ্গাইল মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নূরুল হক নূরের উপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে টাঙ্গাইল আদালত চত্ত্বরের বাইরে থেকে আটক করে টাঙ্গাইল সদর থানায় নেয়া হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মদ জানান, আটকের পর টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিপি নূরের উপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
আগামি কাল আদালতে হাজির করে অধিকতর জিজ্ঞাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
ঘটনা ও মামলার বিবরণ –
জানা যায়, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিপি নূরের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রায় তিন বছর আগের ঘটনা। সেই সময় মামলা নেয়নি পুলিশ।
৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আ্ওয়ামী লীগ সরকাররে পতন হয়।
প্রায় তিন বছর পর ভিপি নূরের উপর হামলার ঘটনায় ওই দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
নূরুল হক নূর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের ভিপি।
চলতি বছর ২ সেপ্টেম্বর (রোববার) রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় এই মামলা তালিকাভূক্ত (রেকর্ড) করা হয়েছে।
মামলায় শাকিলুজ্জামান অভিযোগ করেছেন, টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুক্তমঞ্চের কাছে পৌঁছার পর ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিবিড় পালের নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা করা হয়।
তারা হত্যার উদ্দেশ্যে নূরুল হক নূরের উপর হামলা করে। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।
নেতাকর্মীদের কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ ১৩ হাজার টাকা এবং কয়েকটি মুঠো ফোন ছিনিয়ে নেয়।
পরে কতিপয় পুলিশ সদস্যের সহায়তায় তারা জীবন নিয়ে ফিরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
ঘটনার পর তারা মামলা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু টাঙ্গাইল সদর থানা কর্তৃপক্ষ সে সময় মামলা গ্রহণে অসম্মতি জানায়।
মামলায় যারা আসামী –
এই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাবেক সাধারণ লেখক ভট্টাচার্য্য।
মামলায় অন্যান্য আসামিদের মধ্যে- সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির, ছানোয়ার হোসেন ও খান আহমেদ শুভ, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ রৌফ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাতিনুজ্জামান খান, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক রনি আহমেদের নাম রয়েছে।