বিশ্ববিখ্যাত আধ্যাত্মিক নেতা, দানশীল ব্যক্তি এবং বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা প্রিন্স করিম আগা খান ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। মৃত্যুর পাঁচ দিন পর বিশ্বখ্যাত এই আধ্যাত্মিক নেতাকে মিসরের আসওয়ান শহরে দাফন করা হয়েছে। প্রিন্স করিম আগা খান ছিলেন শিয়া ইসলামের ইসমাইলি সম্প্রদায়ের ৪৯তম বংশগত ইমাম। তার দাতব্য সংস্থা আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক ৫ জুলাই এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর দেয়। পর্তুগালের লিসবনে তার মৃত্যু হয়। প্রিন্স করিম আগা খান সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ছিল এবং তিনি ফ্রান্সের একটি চ্যাটোতে বসবাস করতেন। ১৯৫৭ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে দাদার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন তিনি।
গত রবিবার
তার দাফনকাজ সম্পন্ন হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানায়, প্রিন্স করিমকে মিসরের আসওয়ানে তার দাদা আগা খান তৃতীয়ের সমাধিস্থলে সমাহিত করা হয়েছে। নতুন সমাধি নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত তার মরদেহ সেখানেই সমাহিত থাকবে। তার দাফন পুরোপুরি পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে পর্তুগালের লিসবনের ইসমাইলি সেন্টারে তার জানাজার সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুজা, ইসমাইলি সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার প্রয়াত মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন আগা খান। আগা খানের দাতব্য সংস্থা শত শত হাসপাতাল, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রকল্প পরিচালনা করে, মূলত উন্নয়নশীল বিশ্বে।
তিনি পাকিস্তানের করাচিতে আগা খান ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছাড়া হার্ভার্ড ও এমআইটির যৌথ উদ্যোগে আগা খান প্রোগ্রাম ফর ইসলামিক আর্কিটেকচার চালু করেন। ভারতীয় ঐতিহ্যের সংরক্ষণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, বিশেষ করে দিল্লির ঐতিহাসিক হুমায়ুনের সমাধির সংস্কারে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ রাজপুত্রকে দূরদর্শিতা, বিশ্বাস এবং উদার মানুষ এবং অসাধারণ একজন নেতা হিসেবে বর্ণনা করে শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্যসেবা এবং লিঙ্গ সমতায় অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তিনি প্রান্তিক মানুষের স্বার্থে এগিয়ে এসেছিলেন, অসংখ্য জীবনে এক অমোচনীয় চিহ্ন রেখে গেছেন।’
প্রিন্স করিম আগা খান বিলাসবহুল জীবনযাপন উপভোগ করতেন। বাহামায় একটি ব্যক্তিগত দ্বীপ, একটি সুপার-ইয়ট এবং ব্যক্তিগত বিমান ছিল তার। ১৯৫৭ সালে ২০ বছর বয়সে প্রিন্স করিম আগা খান তার দাদার উত্তরসূরী হিসেবে ইসমাইলি মুসলিমদের ইমাম হন। ফোর্বস ম্যাগাজিন অনুসারে, ২০০৮ সালে রাজপুত্রের আনুমানিক সম্পদ ছিল ১ বিলিয়ন ডলার (৮০১ মিলিয়ন পাউন্ড)। ঘোড়া প্রজননসহ অসংখ্য ব্যবসায়িক স্বার্থের মাধ্যমে তার উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ বৃদ্ধি পায়