অলক কুমার : ‘আমার মেয়ে যখন নতুন নতুন খেলতে যেত, তখন আমাদের অনেক কটুকথা সহ্য করতে হয়েছে।
তবে এখন মেয়ের সাফল্যে ভালো লাগে। যারা একসময় সমালোচনা করত, তারাই এখন প্রশংসা করে।’
সমাজ বদলাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনোভাবও। ক্রীড়াক্ষেত্রে মেয়েদের সাফল্যও মানুষ ভীষণ উপভোগ করে এখন।
কথাগুলো বলেন সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের পক্ষে দুই গোল করা কৃষ্ণা সরকারের মা নমিতা রানী সরকার।
আরো পড়ুন –
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় খেলা দেখতে পারিনি। খেলা শেষ হওয়ার পর প্রতিবেশীরা বাড়িতে এসে জয়ের কথা জানায়।
আমার ছেলেও মোবাইল ফোনে বলেছে। আমি কৃষ্ণাসহ ওদের দলের সবার জন্য দেশবাসীর কাছে আশীর্বাদ চাই।’
এ সময় কৃষ্ণার বাবা বাসুদেব সরকার বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমি পাশের গ্রামে গিয়ে খেলা দেখে দারুণ খুশি।
মেয়ের খেলায় খুব খুশি। এলাকার মানুষও খুব উপভোগ করেছে। অনেকেই আনন্দে শুভেচ্ছা জানাতে আসছে।
কৃষ্ণা যেন দেশের জন্য আরো গৌরব বয়ে আনে, সেই আশীর্বাদ চাই।’
কৃষ্ণার ছোট ভাই পলাশ ঢাকাস্থ গ্রীন ইউনিভার্সিটির প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘দিদির খেলার জন্য সারাদিন উপবাসের ব্রত করেছিলাম।
জয়ের পর দিদির সঙ্গে কথা বলে তারপর খেয়েছি। দিদি টেনশনে ছিল। আমি তাকে সকালে বলেছি, তুমি টেনশন না করে ভগবানের নাম নিয়ে তোমার সেরা খেলাটা খেলার চেষ্টা কোরো।
এদিকে আমরাও উদ্বিগ্ন ছিলাম ফাইনাল নিয়ে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি যেন আমার দেশ এই শিরোপা জেতে।
আর আমার দিদি যেন ভালো খেলতে পারে। ঈশ্বর আমার দুটি কথাই রেখেছেন। এই আনন্দ কাউকে বলে বোঝাতে পারব না।’
টাঙ্গাইলের গোপালপুর ভূঞাপুর আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, কৃষ্ণা দরিদ্র পরিবারের মেয়ে।
ওর অর্জনে আমরা পুরো দেশবাসী গর্বিত। আমাদের গ্রামের মেয়েরা খেলাধুলায় আসতে চায় না। কৃষ্ণা সেখানে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আজ জাতীয় তারকায় পরিণত হয়েছে। ওর সাফল্যকে সম্মান জানাই।
গ্রামের মেয়েদের প্রতিভা বিকাশের জন্য সমাজের বিত্তবানসহ সবাইকে সংরক্ষণশীলতা ভেঙে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই আমাদের সুনাম বয়ে আনবে।
উল্লেখ্য, সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। সেখানে কৃষ্ণা ২ গোল করেন।