খবর বাংলা
,
ডেস্ক
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় শুটার ফয়সালের বাবা ও মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলার তদন্তে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। মামলার মূল অভিযুক্ত শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোছা. হাসি বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারকের খাসকামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দিতে তারা জানান, ঘটনার পর অভিযুক্তদের পালাতে সহায়তা করা এবং ব্যবহৃত অস্ত্র গোপনে সহযোগিতা করেছিলেন তারা। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে বিকেলে পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। পরে বিচারকের নির্দেশে খাসকামরায় নেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে র্যাব-১০ ফয়সালের বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
র্যাবের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, চার সন্তানের মধ্যে ফয়সাল তৃতীয়। তিনি নিয়মিত রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় বোন জেসমিন আক্তারের বাসায় যাতায়াত করতেন। ঘটনার রাতে একটি ব্যাগ নিয়ে ওই বাসায় প্রবেশ করেন ফয়সাল। পরে একটি কালো ব্যাগ বাসার চিপা দিয়ে ফেলে দেন এবং পরে তা আবার উদ্ধার করা হয়। একই সময় নিজের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনের একটি ছাদ থেকে ফেলে দেন এবং অন্যটি মায়ের কাছে রেখে যান।
পরবর্তীতে নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় তিনি আগারগাঁও ছেড়ে মিরপুর হয়ে শাহজাদপুরে যান এবং সেখানে আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান নেন। এ সময় পালাতে ব্যবহৃত ব্যাগ বহনের জন্য তার বাবা একটি সিএনজি ভাড়া করে দেন এবং কিছু অর্থ সহায়তা করেন। পরে তারা কেরানীগঞ্জে ছোট ছেলের বাসায় যান এবং সেখান থেকে নতুন দুটি মোবাইল সিম সংগ্রহ করে ব্যবহার শুরু করেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় চলার সময় শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলি চালানো হয়। গুলিতে তিনি মাথায় গুরুতর আহত হন। পরে ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ ও মোটরসাইকেল চালক আলমগীর হোসেনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ মামলায় ফয়সালের স্ত্রী, প্রেমিকা ও শ্যালকসহ একাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিকানা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির। আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। একই সঙ্গে ফয়সালকে পালাতে গাড়ি দিয়ে সহায়তার অভিযোগে মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বলের তিন দিনের রিমান্ডও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র : দেশ রূপান্তর











