টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমির কুদরত-ই-এলাহীর বিরুদ্ধে ১১ কোটি ১৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছে সমবায় মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। শনিবার টাঙ্গাইল সমবায় সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছে। এ ঘটনায় আমির কুদরত-ই-এলাহীর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাহেলা জাকির। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দখল করে নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সভাপতি পদ দখল করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমির কুদরত-ই-এলাহী খান। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ব্যাংকের মালিকানাধীন সমবায় সুপার মার্কেট ভবন উন্নয়নের নামে ভেঙে সেখানে ১০ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। সেখানকার ব্যবসায়ীদের নতুন ভবনে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে পুরোনো ব্যবসায়ী ও নতুন দোকান ক্রেতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। নানা জটিলতায় আজও মার্কেট নির্মাণ হয়নি। এতে অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে গেছেন। হতাশায় আত্মহত্যা করেছেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। এছাড়াও আরো অন্তত ৩০ জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুদক তদন্ত করে কুদরত-ই-এলাহী এবং সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুলতান আলম খানের পরস্পরের যোগসাজশে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে। দুদক তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সমবায় ব্যাংকের ১০ তলা শপিং কমপ্লেক্স প্রকল্পের দোকান গ্রহীতাদের কাছ থেকে অগ্রিম জামানত হিসেবে মোট ১১ কোটি ১৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা গ্রহণ করা হয়। পরে ওই টাকা কুদরত-ই-এলাহী খান চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। টাকাগুলো ঠিকাদারকে অগ্রিম দেওয়ার বানোয়াট ভাউচারের মাধ্যমে তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কুদরত-ই-এলাহী খান আত্মগোপনে আছেন। তাঁকে মুঠোফোনেও পাওয়া না যাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। সরকার পতনের পর টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সভাপতি পদ থেকে কুদরত-ই-এলাহীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।