৩ মাসের মধ্যে দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার চ্যালেঞ্জ দিলেন সচিব

ডেস্ক নিউজ : প্রধানমন্ত্রী সুযোগ দিলে ৩ মাসে দেশের সকল দুর্নীতি দূর করতে পছন্দের ১০ কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি টিম চান রেলপথ মন্ত্রণালয় এর অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর। বুধবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে এ কথা বলেন অতিরিক্ত সচিব।

আমি যদি প্রধানমন্ত্রীকে পেতাম তবে বলতাম, স্যার আমাকে ১০ জন অফিসার দিন। এদের আমি চুজ করব, এদের নিয়ে আমি একটা টিম করব। মানুষের চোখের পানি দূর করার জন্য সব মন্ত্রণালয়, সব দফতর, সব অধিদফতরের বিষয়গুলো শনাক্ত করব আমরা এই ১০ জন।’

‘করতে না পারলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। এটা আমার খুব ইচ্ছা।’

‘তবে আমাদের স্বাধীনতা দিতে হবে, জবাবদিহিতা থাকবে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে। অন্য কারও কাছে নয়। কেন এই কথাটা বলছি- নানা পারিপার্শ্বিকতা আমাদের কাজ করতে দেয় না। নানা কারণে করতে দেয়া হয় না। সেখানে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে, সেখানে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১০ জন সৎ কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি টিম গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর মিলন। এই টিম তিন মাসের মধ্যে দেশের সব খাতের দুর্নীতি দূর করবে বলেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।

অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর এর আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিছু সময়ের জন্য ছিলেন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও। এ সময় তিনি ভেজাল ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হন।

তিনি বলেন, আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তবে হতাশা হচ্ছে ওই জায়গায়, আমরা পারা জিনিস অনেক সময় করি না। পারা জিনিসও অনেক সময় পারব না মনে করে বসে থাকি।

তিনি বলেন, কেউ যদি বলে আমরা দুর্নীতি দূর করতে পারব না, কেউ যদি বলে সিন্ডিকেট ভাঙা যায় না, আমি ওটারই চ্যালেঞ্জ দিয়েছি— আমার তিন মাস সময়ই যথেষ্ট, যেকোনো ডিপার্টমেন্টের সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য। এনাফ টাইম। দেশের অনেক ডেভেলপমেন্ট আনা যাবে, অনেক পরিবর্তন আনা যাবে। পারা যায়, আমরা পারবই।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমি একটা ১০ জনের প্রতীকী রূপরেখা দিয়েছি। এটা ১৫ জন হতে পারে। অনেক ডেডিকেটেড ছেলে আছে সরকারি চাকরিতে। দশটা সৎ ডেডিকেটেড মানুষকে যদি স্বাধীনতা দেয়া হয় তারা ১০ হাজার জনের কাজ করতে পারবে।

এসময় তিনি আরো বলেন, আমাদের অতীতের রেকর্ড তো গৌরবান্বিত। হতাশা তো আমাদের তখনই আসে যখন পারা জিনিস করি না, পারি না বলে বসে থাকি। আর করতে দেয়া হয় না, এটা হলো সবচেয়ে বড় কথা। আর একটা বিষয় আছে, অনেকে রিস্ক নিতে চায় না। ভাবে, সিন্ডিকেট ভাঙতে যাব, কী দরকার, না জানি কোথায় ঝামেলায় পড়ে যাই!

তিনি আরও বলেন, একটা শ্রেণি আছে, ইচ্ছামতো লুটপাট করে খাচ্ছে। তারা ভালো কাজ করে না, ভালো কাজ করতেও দেয় না। আবার ভালো শ্রেণি, তারা যদি ভয়ে থাকে, ভালো কাজ করতে সংকোচবোধ করে, তবে তো আমরা দুদিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। এভাবে চললে তো আমরা যত দ্রæত উন্নয়ন চাচ্ছি সেভাবে হবে না।

সরকারি কর্মকর্তা যারা ভালো, যারা সৎ, তারা অনেক সময় আগ বাড়িয়ে কাজ করতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেন, তারা (সৎ কর্মকর্তা) নানা সমস্যায় ভোগেন। আমি বিরাগভাজন হবো, আমার প্রমোশন হবে না, আমিও ওএসডি হয়ে যাব, এগুলো চিন্তা করে।

অনেক সৎ মানুষ ঝামেলায় যেতে চায় না, চুপ করে থাকেন, কোনো ঝামেলা সহজে পছন্দ করে না। কে, কী করে করুক। এটাও কিন্তু আমাদের জন্য ক্ষতিকারক।