সৎ পিতার লোভের শিকার হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছেন রিফা (২৫)। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে বাঁশতৈল ফাঁড়ি পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া ধান ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার হয়।
ভুক্তভোগী ওই মেয়ের নাম রিফা আক্তার (২৫)। সৎ পিতার নাম আলমগীর হোসেন। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার শহরতলীতে।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশ, ৫ বছর বয়সে রিফার মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা দুলাল দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই রিফার বাবাও মারা যান। পরে তার সৎ মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। সৎ পিতা মাতার অনাদর-অবহেলায় একদিন রিফা বাড়ি ছেড়ে গাজীপুরের টঙ্গি জামাইবাজার এলাকায় লতা ওয়াশিং ফ্যাক্টরিতে চাকুরী নেন। চাকুরীর পর তার সৎ পিতা তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে থাকে। রিফা তার পিতা মাতার আদর ¯েœহের আশায় প্রতিমাসে বেতনের একটা অংশ সৎ পিতার হাতে তুলে দেন। এমনিভাবে চলে প্রায় দশ বছর। এরই মধ্যে সৎ পিতা আলমগীরের দৃষ্টি পড়ে রিফার নামে থাকা তিন বিঘা জমির ওপর। ছলেবলে এই জমি আত্মসাতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ওই সৎ পিতা।
ঘটনার দিন গত সোমবার রাতে সৎ পিতা আলমগীর রিফাকে নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু চন্দ্রা থেকে লোকাল বাসে উঠলে রিফা এর কারণ জানতে চায়। হাটুভাঙ্গা এলাকায় তার এক বন্ধুর বাসায় রান্না করা হয়েছে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করে তার পর বাড়ি যাবে বলে তাকে জানানো হয়। এরই মধ্যে চলন্ত বাসে সৎ পিতা তাকে শশা এবং আমড়ার সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ান। একসময় সে বাসেই অচেতন হয়ে পড়ে। জ্ঞান ফিরে বুধবার দুপুরে রিফা দেখতে পায় সে কুমুদিনী হাসপাতালের বিছানায়। জ্ঞান ফিরে সে কিছু কিছু কথা বলতে পারে বলে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সীমান্ত জানিয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিফা কাপা কাপা কন্ঠে বলেন, একটু আদর স্নেহের আশায় বাবাকে টাকা দিয়েছি। তবু তা মেলেনি।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান বলেন, রিফার নামে থাকা তিন বিঘা জমি আত্মসাত করার জন্যই যেকোন উপায়ে রিফাকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সৎ পিতা এই পন্থা অবলম্বন করেছে। রিফা সুস্থ হলেই ওই সৎ পিতার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।