ভূঞাপুর সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা মামলার কারণে ভাঙা ঘরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে বাছেদ খানের।
উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের মাইজবাড়ি এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ খানের মিথ্যা মামলার কারণে প্রতিবেশী আব্দুল বাছেদ খান ভাঙা ঘরে প্রচন্ড শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মাইজবাড়ি গ্রামের আব্দুল বাছেদ খানের পৈত্রিক সম্পত্তির বাড়ি সীমানা জটিলতার কারণে ঘরের কাজ ও গাছ কাটতে না পারায় পরিবার নিয়ে প্রচন্ড শীতের মধ্যে ভাঙা ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আরো পড়ুন – প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর নির্দেশ অমান্য, ফসলি জমি কেটে রাস্তা তৈরি
বাড়িতে একটি টিনের ঘর থাকলেও সেটির মেরামদের কাজ করতে না পারায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।
জানা গেছে, আব্দুল বাছেদ খানের সাথে প্রতিবেশী বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ খানের সাথে বাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে কয়েক বছর ধরে।
কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা রশিদ খান তার বাড়ির পুকুর ও জায়গার সীমানা নির্ধারণ না করে প্রতিবেশী আব্দুল বাছেদের জায়গা দাবী করে কোর্টে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
এতে বাড়ির সীমানার জমি উল্লেখ না করে তার পুকুরের জমির বিষয়ে ১৪৪ ধারা করান কোর্ট থেকে।
এছাড়াও বাছেদের বিরুদ্ধে আরো দুইটি মামলা দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ খান।
এদিকে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত ও শান্তিতে বসবাসের জন্য আব্দুল বাছেদ খান থানা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, বাছেদের বাড়ির ৮৪৩ নম্বর দাগের ১১৫ খতিয়ানে জমির পরিমাণ ৫১ শতাংশ।
এরমধ্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা রশিদ খানের ২৬ শতাংশ এবং বাছেদ ও তার ভাইদের ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে।
এই জমির মধ্যে ১৩ শতাংশ জমি বাছেদ ক্রয় করার পর দখল নিয়ে রেকর্ড করে নেন।
কিন্তু ১৩ শতাংশ জমি ক্রয় করার কারণে প্রতিবেশি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ খান বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এতে বাছেদ তার জমিতে থাকা গাছ কাটতে গেলে বাঁধা প্রদান করছে।
ভূক্তভোগী বাছেদ খানের বক্তব্য :
আব্দুল বাছেদ খান জানান, ওই মুক্তিযোদ্ধা অযথাই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। সীমানা জটিলতার কারণে বাড়ির গাছ কাটতে পারছি না।
আরো পড়ুন – ভূঞাপুরে মাদরাসা ছাত্রীকে অপহরণ মামলার আসামীকে আটকের পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ
বাড়িতে একটি মাত্র টিনের ঘর সেটিও ভাঙাচোড়া। বাড়ির কাজ করতে গেলেও বাঁধা দেয়।
ফলে ভাঙাচোরা ঘরে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
মিমাংসার জন্য একাধিকবার গ্রাম্যসালিস অনুষ্ঠিত হলেও আব্দুর রশিদ খান উপস্থিত হয় না।
জমির সীমানাও ঠিক করছে না উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। একটি দাগের মধ্যে পুকুর নিয়ে ১৪৪ ধারা জারি আছে কিন্তু জমি বা সীমানা নিয়ে নাই।
এই বিষয়ে মোবাইলে একাধিক যোগাযোগ করা হলেও মুক্তিযোদ্বা আব্দুর রশিদ খান ফোন রিসিভ করেননি।
পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্য :
ভূঞাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. লিটন জানান, সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিষয়টি নিয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না; তাদেরকে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলার ফলদা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম তালুকদার দুদু বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে বাছেদকে।
গ্রাম্যসালিসের আয়োজন করলেও বিভিন্ন অযুহাত দিয়ে এড়িয়ে যায় সালিসে উপস্থিত না হয়ে।
এছাড়া বিষয় সমাধানের জন্য থানা পুলিশকে বারবার বললেও তারা কর্ণপাত করে না। সম্পাদনা – অলক কুমার