নিজস্ব প্রতিবেদক : অবশেষে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছে।
গঠনতন্ত্র সংশোধনের মধ্যদিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ ছয় নেতার সদস্যপদ বাতিল হয়েছে।
এছাড়াও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকের সদস্যপদ বাতিল হওয়ার ফলে মনোনীত আরো একজনের সদস্যপদও বাতিল হয়ে যায়।
আজ শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক বিশেষ সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারার সংশোধন করা হয়।
এই সংশোধনের ফলে প্রেসক্লাব রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠনে পরিনত হবে বলে ধারনা করছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিক ও সচেতনমহল।
যাদের সদস্য পদ বাতিল হয়েছে –
প্রেসক্লাবের সদস্যপদ বাতিল হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদ্যপ্রয়াত ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভ ও কার্যকরী সদস্য সুজয় দেব এবং শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনি।
এদিকে সম্পাদকের মৃত্যুর ফলে দৈনিক দেশবাসী ও সাপ্তাহিক মৌ বাজার পত্রিকার সম্পাদকের মৃত্যুতে এই দুই পত্রিকার কোটায় মনোনীত দুই সদস্যের সদস্যপদ নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
এরা হলেন যথাক্রমে নিলুফা ইয়াসমিন স্নিগ্ধা ও আশিকুর রহমান পলাশ।
অন্যদিকে দৈনিক টাঙ্গাইল সময় পত্রিকার সম্পাদকের সদস্যপদ বাতিল হওয়ায় পত্রিকার মনোনীত মোজাম্মেল হকের সদস্যপদ নিয়েও ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
বিস্তারিত ঘটনা –
জানা গেছে, ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের গত ১৬ বছর ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবকে কার্যত জেলা আওয়ামী লীগের বিকল্প কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ওই সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও তিন এমপিসহ শীর্ষ ছয় নেতা সদস্যপদ লাভ করেন।
সে সময় জেলার সকল টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বানিজ্য, মনোনয়ন বানিজ্য, পদ বানিজ্যসহ সকল ধরনের অপকর্মের আস্তানায় পরিনত হয় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব।
গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন এসব অপকর্মের প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের নির্যাতিত ও বঞ্চিত সাংবাদিকসহ জেলায় কর্মরত বিক্ষুদ্ধ সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
এ সময় সাংবাদিকরা গঠনতন্ত্র পরিবর্তন ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রেসক্লাব এবং প্রেসক্লাবকে সাংবাদিক বান্ধব করতে গঠনতন্ত্রের সংশোধনসহ ব্যাপক সংস্কারের দাবিতে নানা কর্মসুচি পালন ও আল্টিমেটাম দেয়।
এরই প্রেক্ষিতে প্রেসক্লাবের জৈষ্ঠ্য সাংবাদিকরা গঠনতন্ত্র সংস্কারসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
পরে প্রেসক্লাবের কার্যকরী পরিষদ বিশেষ সাধারন সভা আহবান করে।
এর আগে প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান খান আজাদকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- কাজী জাকেরুল মওলা, নাসির উদ্দিন, কামনাশীষ শেখর এবং মির্জা শাকিল।
এবিষয়ে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ বলেন, প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের সংগঠন। গঠনতন্ত্র সেই সংগঠনের প্রাণ।
এসময় তিনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন বা সংশোধন হবে এবং সেই মোতাবেক প্রেসক্লাব পরিচালিত হবে।
আরো যারা বক্তব্য রাখেন –
আলোচনা বক্তব্য রাখেন- সাংবাদিক বিমান বিহরী দাস, খান মোহাম্মদ খালেদ, আতাউর রহমান আজাদ, শামসাদুল আখতার শামীম, মাহমুদ কামাল, আবু রায়হান খান, কামনাশীষ শেখর, মির্জা শাকিল, মহব্বত হোসেন, সোহেল তালুকদার প্রমুখ।