ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে সময়ভেদে ২৫ থেকে ৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঘরমুখো মানুষ ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরতে অপরিসীম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। যানজট নিরসনের প্রাণন্তকর চেষ্টা করেছে পুলিশ। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের কোন প্রকার তৎপরতা দেখা যায়নি। যদিও এই সকল দায়িত্ব দিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বুধবার মধ্যরাতের পর থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা যায়।
সরেজমিনের রাস্তার বিভিন্ন অংশে ঘুরে দেখা যায় সাধারণ মানুষের বিভিন্ন রকম ভোগান্তির চিত্র। সাধারণ মানুষ বাস, মিনিবাস, মোটরসাইকেল, সিএসজি এমনকি ট্রাকে করেও নারীর টানে বাড়ি ফেরার জন্য ছুটে চলেছে। কিন্তু তাদের সেই যাত্রা হয়নি সুখকর। অতিরিক্ত ভাড়ার পাশাপাশি সহ্য করতে হয়েছে তীব্র রোদে পুড়ে ও মুষলধারার বৃষ্টির মধ্যে ভিজে যানজটে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকা। আটকে থাকার সময় ঘরমুখো মানুষদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের কষ্ট ছিলো অসহনীয়। তীব্র রোদের তাপে বেশ কয়েকজনকে অসুস্থ হতেও দেখা গেছে।
দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকা ঘরমুখো মানুষ এই ঈদযাত্রায় সরকারি কোন মানবিক সহায়তা না পেলেও রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ দোকানে থেকে অতিরিক্ত দামে কিনতে পেরেও খুশি যাত্রীরা। কারণ দীর্ঘ যানজটে আটকে থেকে তাদের নিকট সঞ্চিত খাবার ও পানীয় শেষ হয়ে গিয়েছিল।
রংপুরগামী আশিকুর রহমান বলেন, আগামীকাল সকালে ঈদ কিন্তু রাস্তার যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে বাড়ি যেতে পারবনা। সাথে পরিবার রয়েছে, সবাই ক্ষুধার্ত। রাস্তার পাশে কোন খাবারের দোকানও নেই যে কিছু কিনে খাবো।
দিনাজপুরগামী জনি মিয়া নামে একজন বলেন, টাঙ্গাইল শহর থেকে এলেঙ্গার দূরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। আর এই রাস্তা দিয়ে আসলাম ৩ ঘন্টায়। যেখানে স্বাভাবিক সময় লাগে ২০ মিনিট। এই গরমে যানযটের কারণে ঈদের আনন্দ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রাজশাহীগামী নাদিয়া আক্তার নামে এক বাস যাত্রী বলেন, গতকাল রাত ৯টায় ঢাকা থেকে বগুড়ার উদ্দেশ্য করে রওনা হয়েছি। এখন দুপুর ১টা টাঙ্গাইল পার হতে পারলাম না কখন বাড়ি ফিরবো তার ঠিক নেই। এদিকে সাথের হালকা খাবার, পানিও শেষ হয়ে গেছে।
পুলিশের বক্তব্য –
এলেঙ্গা হাইওয়ে ফাঁড়ি ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ধীর গতিতে গাড়ি চলাচল করছে। গাড়ি দ্রুত পারাপারের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। রাতে সেতুর উপরে কয়েকটা গাড়ি বিকল হয়ে যায়।যার ফলে গাড়িগুলো অপসারণ করতে সময় লাগে আর এ জন্য যানযট লেগে যায়।
অপরদিকে গোড়াই হাইওয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসিম উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, সাধারণ একটি দিনের চাইতে তিন থেকে চার গুণ বেশি গাড়ি চলেছে। কোথায় কখন কি হচ্ছে, আপনাদের মাধ্যমে আমরা সর্বক্ষণ জানতে পেরেছি। আমরা সেই মোতাবেক আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সকলকে ঈদের আগেই বাড়িতে পাঠাতে সক্ষম হয়েছি বলে আশা করি।