টাঙ্গাইলের ধলেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত শামছুল হক সেতু ইজারা নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে পাইয়ে দিতে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে দরপত্র আহবানে দূর্নীতি করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সওজ’র প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দাখিল করেছে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলার সংযোগস্থল এলাসিনে ধলেশ্বরী নদীর উপর ৯৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫১৫.১২ মিটার দীর্ঘ ও ১০.২৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি সওজ নির্মাণ করে। বিগত ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন। প্রতিদিন কয়েক হাজার ছোট-বড় যানবাহন ও লক্ষাধিক মানুষ এ সেতু দিয়ে পারাপার হয়ে থাকে।
সওজ সূত্রে প্রকাশ, সওজ’র টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের আরিচা-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কে ৩৯ কিলোমিটারে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত শামছুল হক সেতুর টোল আদায়ের জন্য গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর তিন অর্থ বছরের (১০৯৫ দিন) জন্য কোটেশন বিজ্ঞপ্তি (নং-০২/কো./ইই/টিআরডি/২০১৯-২০২০) প্রকাশ করা হয়। একই বিজ্ঞপ্তি গত ২৩ জানুয়ারি দ্বিতীয়বার প্রকাশ করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিটি ৩য় বার হিসেবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করে টাঙ্গাইল সওজ। সর্বশেষ ৪র্থ আহবান হিসেবে একই বিজ্ঞপ্তি ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ, ধ্রুব এণ্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কয়েক বছর যাবত দরপত্র আহবানের অনুরোধ জানালে সওজ কার্যালয় থেকে তাদেরকে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়। ফলে ইতিপূর্বে তারা ইজারায় অংশ নিতে পারেনি। চলতি বছর ইজারার দরপত্র আহবান করলে ধ্রুব এণ্টারপ্রাইজ, মেসার্স বাবুল এণ্টারপ্রাইজ, মেসার্স আপেল এণ্টারপ্রাইজ টাঙ্গাইল সওজ কার্যালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও নানা তালবাহানায় তাদেরকে সিডিউল দেওয়া হয়নি। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে দরপত্রের সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে বলে সওজ কার্যালয় থেকে জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টাঙ্গাইল সওজ’র চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আব্দুর রউফের সার্বিক সহযোগিতায় কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী গোপনে পূর্বের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লুথ এণ্টারপ্রাইজকে ইজারা পাইয়ে দিতে তৎপর থাকে।
ধ্রুব এণ্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমান জানান, মেসার্স লুথ এণ্টারপ্রাইজকে ইজারা পাইয়ে দিতেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে কাগজপত্রে ৪র্থ বার দেখানো হলেও কোন বারই কাউকে জানানো হয়নি। টাঙ্গাইল সওজ’র নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়নি। পূর্বের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লুথ এণ্টারপ্রাইজ ব্যতিত সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। কোন পত্রিকায় কত তারিখে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয়েছে কর্তৃপক্ষ তাও বলছে না। অথচ গোপনে মেসার্স লুথ এণ্টারপ্রাইজকে সিএস পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল সওজ অধিদপ্তরের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান জানান, তিনি নতুন এসেছেন, এ বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না।