টাঙ্গাইলে গুলি করে টাকা ছিনতাই; আরো তিন লাখ টাকা উদ্ধার; সজীবের বোন ও শ্বশুর গ্রেপ্তার

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পোস্ট মাস্টারকে গুলি করে ছিনতাই হওয়া ৫০ টাকার আরো তিন লাখ টাকা সোমবার উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এই ঘটনার মাস্টার মাইন্ড উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজীবের চাচাতো বোন ও তার শ্বশুরকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এনিয়ে মোট ২২ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আর এই মামলার মোট ৮ জনেক গ্রেপ্তার করা হলো।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত জানান, গত ১৭ মে কালিহাতী পোস্ট অফিস থেকে ৫০ লাখ টাকা তুলে বল্লা পোস্ট অফিসে যাওয়ার পথে পোস্ট মাস্টারকে গুলি করে ৫০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর আগে দুই দফায় ১৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ছিনতাইয়ের মূল হোতা মনিরুল ইসলাম সজীবের সাথে তার চাচাতো বোন সুলতানা রাজিয়ার (৩৮) যোগাযোগ থাকার বিষয়টি জানা যায়। পরে রোববার কালিহাতী উপজেলার সিংগাইর উত্তরপাড়া গ্রামে শ্বশুর বাড়ি থেকে সুলতানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে সুলতানা পুলিশকে জানান, ঘটনার দিন সজীব তার বাড়িতে দশ লাখ টাকা রেখে যান। গত ১০ জুন সজীবের শ্বশুর বাড়ি থেকে ছিনতাই হওয়া সাড়ে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার হওয়ার খবর পেয়ে তিনি (সুলতানা) বিচলিত হয়ে পড়েন। টাকা তার শ্বশুর বাড়ির বিভিন্ন জনের কাছে লুকিয়ে রাখেন। শ্বশুর মোশারফ হোসেনের (৭০) কাছে তিন লাখ টাকা রাখেন। মঙ্গলবার শ্বশুর মোশারফ টাকা নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আসার পর তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

বিকেলে মোশারফ হোসেনকে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। সুলতানা রাজিয়া আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হওয়ার পর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ছিনতাইয়ের এই ঘটনায় পুলিশ ২১ মে জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য তামজিদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। আদালতে জবানবন্দিতে জিসান জানান, যুবলীগ নেতা সজীবের নেতৃত্বে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পরে গোয়েন্দা পুলিশ ১০ জুন সজীবের শ্বশুর নাগবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইমান আলী ও তার ছেলে ইমরান নাজিরকে গ্রেপ্তার করে।

এসময় তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাদের বাড়ি থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত উজ্জল ও উমরগাজী নামক দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকেও এক হাজার টাকা উদ্ধার হয়।

উল্লেখ্য, এই ঘটনার সহিত জড়িত গ্রেপ্তারকৃত অন্য ছয় আসামিরা হলো, ঘাটাইল উপজেলার নাটশালা গ্রামের মৃত. জহিরুল ইসলামের ছেলে তামজিদুল ইসলাম জিসান (২৫)। কালিহাতী উপজেলার গান্ধিনা এলাকার মৃত মুকিম উদ্দিনের ছেলে মো. ইমান আলী (৬৫) এবং তার ছেলে মো. ইমরান নাজির (১৯), আউলিয়াবাদ (ছাতিহাটি) চড়পাড়া এলাকার মো. করিম মিয়ার ছেলে মো. উজ্জল মিয়া (২৮), হাসড়া এলাকার ফজলুল হকের ছেলে ওমর গাজী (২৮) এবং বল্লা পূর্ব পাড়া এলাকার মৃত নুরুল হুদার ছেলে হুমায়ুন কবির (৩০)।