টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে স্বামীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্ত্রী’র বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কালিহাতীর ভবানীপুর গ্রামের মো. জহিরুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে মো. শওকত তালুকদার বাদী হয়ে তার স্ত্রী ফারহানা ফারিহা ওরফে কাজলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা করা হয়েছে কালিহাতী থানা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ফারহানার প্রেমিক মো. মাসুম আকন্দ, ভাই আশিকুর রহমান আশিক, বাবা আবুল কালাম আজাদ ওরফে খসরু, মা আনোয়ারা বেগম, এবং বড় বোন কানিজা ফাতেমা ও কামরুন্নাহার লতা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, স্কুলশিক্ষক শওকত তালুকদার ও ফারহানার বিয়ে হয় ২০১৭ সালের ১৫ মে। বিয়ের পর শওকত তার স্ত্রীকে ৯ম শ্রেণি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়ার সুযোগ দেন। পরে ফারহানা ঢাকায় গিয়ে আইইএলটিএস ও অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে জাল কাগজপত্র দেখিয়ে ধাপে ধাপে বিকাশ, নগদ ও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে মোট ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
২০২৪ সালের এপ্রিলে ফারহানা তার প্রেমিক মাসুম ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে শওকতের বাড়িতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসিংয়ের কথা বলে ৯ লাখ টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে তিনি দাবি অনুযায়ী টাকা দেন। কিন্তু পরে জানা যায়, ফারহানার কোনো আইইএলটিএস স্কোর বা অস্ট্রেলিয়া ভিসা নেই, এমনকি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হননি।
১৩ মাস পর শওকত জানতে পারেন, ফারহানা টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রিপাড়ায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করছেন। তদন্তে উঠে আসে, ফারহানা নিয়মিতভাবে তার পরকীয়া প্রেমিক মাসুম আকন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। চলতি বছরের ১২ জুলাই রাতে ফারহানা শওকতের বাসায় গেলে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি টাকা না ফেরত দিয়ে শওকতকে হুমকি দিতে শুরু করেন।
বাদী শওকত তালুকদার বলেন,
“আমার স্ত্রী আমাকে জাল কাগজ দেখিয়ে প্রতারণা করেছে। আমার বিশ্বাস ভেঙে আমাকে নিঃস্ব করেছে। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করছি।”
ফারহানা ফারিহার সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের এপিপি এম এ মালেক আদনান জানান, “গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার রেকর্ড নেওয়া হয়েছে এবং তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি)। সঠিক তদন্ত হলে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।”