টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নির্বাচন অফিসে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় পৌর বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উত্থান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লিটন, যুগ্ম সম্পাদক মহির উদ্দিন ও যুবদল নেতা কামরুল ইসলাম, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মো. তুহিনসহ অজ্ঞাত আরও ১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়াও নির্বাচন অফিস এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় খালিদ হাসান উত্থান ও কাজী লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। তাদের কী সেবা দিতে হবে জানতে চাইলে বিএনপির নেতাকর্মীরা কর্মকর্তাদের বলেন- তোরা আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেছিস। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এর প্রতিবাদ করলে নির্বাচন কর্মকর্তার ওপর হামলা ও ভাঙচুর চালায়। কয়েকজন ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এতে অন্তত ৮০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু রায়হান, ডাটা এট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
ঘটনার পর টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা তাজুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা শুধু ফিরাতে গিয়েছিলাম। কাউকে কোনো কিছু বলিনি। আওয়ামী লীগের ট্যাগ দিয়ে আমাদের বেদম মারধর করা হয়েছে। যেখানে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি, তার আগেই নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।
মামলার বাদী গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে আসেন। সোমবার এসেই তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ আওয়ামী লীগের ট্যাগ দেওয়া শুরু করেন। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের অফিসে নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি করছি।
জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তাদের কাছে জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় নিরাপত্তার জোরদারের দাবি করেছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করছি। এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনের আগে এমন হামলা হবে তা আমরা কখনও কল্পনাও করিনি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সরকারি কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনাটি ন্যক্কারজনক। তাদের কোনো ভুল থাকলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে অবগত করতে পারত। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।











