বিশেষ প্রতিবেদক : আগামি ৩০ জানুয়ারি এই পাঁচটি পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হবে। পৌরসভাগুলো হলো- টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, মধুপুর, ভূঞাপুর ও সখীপুর।
এই পাঁচটি পৌরসভার রয়েছে ৫৪টি ওয়ার্ড। পাঁচটিতে মোট ১৫ জন মেয়র, ৮০ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ২৩৫ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র তিন দিন। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই উত্তেজনা ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিনে নির্বাচনী এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে পৌরসভার প্রতিটি অলিগলি, সাথে চলছে উচ্চস্বরে মাইকিং।
প্রার্থীরা তাদের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি নিয়ে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। চেষ্টা করছেন তাদের মন জয়ের।
সকাল থেকেই প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আর ভোটাররা বলছেন, যারা উন্নয়ন করবে তাদেরকেই ভোট দিবেন।
সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত প্রার্থীদের দিকেই ঝুঁকছে ভোটাররা। সমাজের পরিবর্তন প্রত্যাশার সুর পাওয়া যায় ভোটারদের সুরে।
এবিষয়ে কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষক জানান, শিক্ষিত ভদ্র, মাদকমুক্ত প্রার্থীই তাদের প্রথম পছন্দ।
ভিক্টোরিয়া রোডের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষিত, মাদকমুক্তরাই রয়েছে তাদের পছন্দের তালিকায়।
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া এপর্যন্ত বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এই পাঁচটি পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণায়।
এদিকে নির্বাচন কমিশন বলছে, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
পাঁচটি পৌরসভার বিস্তারিত – টাঙ্গাইল পৌরসভা –
১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল পৌরসভায়। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত সিরাজুল হক আলমগীর, বিএনপি মনোনীত মাহমুদুল হক সানু ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মো. আব্দুল কাদের রয়েছেন।
এছাড়া এই পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে ৩৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ১০০ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরসভায় মোট ভোটার ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৪২৫। এর মধ্যে ৬০ হাজার ৩৩৪ জন পুরুষ ও ৬৪ হাজার ৯১ জন মহিলা ভোটার।
মির্জাপুর পৌরসভা –
মির্জাপুর পৌরসভায় রয়েছে ৯টি ওয়ার্ড। এই পৌরসভা নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত সালমা আক্তার, বিএনপি মনোনীত মো. শফিকুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শহিদুর রহমান।
এছাড়া এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১১ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩০ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরসভার মোট ভোটার ২১ হাজার ৬৬৯। এর মধ্যে ১০ হাজার ১৯১ জন পুরুষ ও ১১ হাজার ৪৭৮ জন মহিলা ভোটার।
ভূঞাপুর পৌরসভা –
ভূঞাপুর পৌরসভায় রয়েছে ৯টি ওয়ার্ড। এই পৌরসভা নির্বাচনে ৪ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মাসুদুল হক মাসুদ, বিএনপি মনোনীত মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়াও এই পৌরসভায় মেয়র পদে ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলো, মো. আমিরুল ইসলাম তালুকদার ও মো. আব্দুল সাত্তার।
ভূঞাপুর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১১ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরসভার মোট ভোটার ২১ হাজার ৭২৯। এর মধ্যে ১০ হাজার ৭৮৯ জন পুরুষ ও ১০ হাজার ৯৪০ জন মহিলা ভোটার।
মধুপুর পৌরসভা –
৯টি ওয়ার্ড নিয়ে মধুপুর পৌরসভা গঠিত। এই পৌরসভা নির্বাচনে ২ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. সিদ্দীক হোসেন, ও বিএনপি মনোনীত মো. আ. লতিফ পান্না।
এছাড়া এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৪১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরসভার মোট ভোটার ৪১ হাজার ৯৩৯। এর মধ্যে ২০ হাজার ৭৫২ জন পুরুষ ও ২১ হাজার ১৮৭ জন মহিলা ভোটার।
সখীপুর পৌরসভা –
৯টি ওয়ার্ড নিয়ে সখীপুর পৌরসভা গঠিত। এই পৌরসভা নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আবু হানিফ আজাদ, বিএনপি মনোনীত মো. নাছির উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সানোয়ার হোসেন সজীব। এছাড়া এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১০ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরসভার মোট ভোটার ২২ হাজার ৩৩৭। এর মধ্যে ১০ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও ১১ হাজার ৫৭৫ জন মহিলা ভোটার।
এবিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা সিনিয়র নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় সংখ্যক র্যাব, পুলিশ, আনসার নিয়োগ দেয়া হবে।
এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। সম্পাদনা – অলক কুমার