ডেস্ক নিউজ : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ উঠায় ইউএনও মনজুর হোসেনকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার জারি করা প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে আজ রোববার তাকে বদলি করা হয়েছে।
ইউএনও মনজুর হোসেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. শামীম আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গতকাল জনপ্রশাসনের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁর বদলির আদেশ হয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল মনজুর হোসেন করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাফসা নাদিয়াকে বর্তমানে ইউএনওর অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ থেকে যা জানা যায় –
স্থানীয় সূত্র ও টাঙ্গাইলের কলেজছাত্রীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, মো. মনজুর হোসেন ২০২১ সালে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় ইউএনওর দায়িত্বে থাকাকালীন তার সঙ্গে পরিচয় হয় ওই কলেজছাত্রীর।
একপর্যায়ে ইউএনও ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার বাসাইল সরকারি বাসভবনে নিয়ে যান; সেখানে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান।
কলেজ শিক্ষার্থীর অভিযোগে আরও বলা হয়, ইউএনওর বিয়ের আশ্বাসে অন্যত্র বিয়ের সব প্রস্তাব নাকচ করে দেন তিনি ও তার পরিবার।
একপর্যায়ে ওই কলেজছাত্রী ও ইউএনও টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজের সঙ্গে পাওয়ার হাউজের পেছনে একটি বাসায় একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন।
পরে কলেজছাত্রী তাঁকে বিয়ে করে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য ইউএনওকে চাপ দিতে থাকেন।
এ সময় তারা দুজনে ভারতে বেড়াতে যান। ভারত থেকে ফিরে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন।
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে সরকারি গাড়িতে বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হন; সেখান থেকে সরকারি গাড়ি ত্যাগ করে ভারতে প্রবেশ করেন এবং ১২ অক্টোবর তারা দেশে ফিরে আসেন।
এর আগে ভারতে অবস্থানকালে ইউএনও একাধিকবার ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তী সময়ে কলেজছাত্রী ইউএনওর পাসোর্নাল ব্যাগ থেকে পাসপোর্ট বের করে জানতে পারেন তিনি বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে।
ইউএনওর কাছে কলেজছাত্রী এ বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কলেজছাত্রীর মোবাইল জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন এবং তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ও মেসেজ চ্যাটিংসহ সব আলামত ডিলিট করে দেন।
ইউএনও মনজুর হোসেন কলেজছাত্রীকে বিষয়টি কারও সঙ্গে শেয়ার না করতে শাসান এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
গত ৯ মার্চ ইউএনও বাসাইল উপজেলা থেকে বদলি হয়ে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।
এদিকে স্ত্রীর মর্যাদা না দেওয়া, ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে এর প্রতিকার চেয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন ওই কলেজছাত্রী।
তদন্ত ও অভ্যন্তরীন বিচারের ফলাফল –
এ ঘটনা তদন্তের জন্য গত ২৯ মার্চ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিন উভয়কে নিজ নিজ প্রমাণাদিসহ তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে আরো জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) উভয় পক্ষ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিনের সঙ্গে বিচারে বসে।
কিন্তু সেখানেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। সূত্র – এনটিভি অনলাইন; সম্পাদনা – অলক কুমার