সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী শ্যামা পূজা ও দীপাবলি আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) সারাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি বছর দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর পরবর্তী কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দেবী শ্যামার আরাধনা এবং দীপাবলি উৎসব উদযাপন করা হয়।
সন্ধ্যা থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ টাঙ্গাইলের মন্দির, বাসাবাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হাজারো প্রদীপের আলোয় আলোকিত হবে। অশুভ শক্তির অন্ধকার দূর করে শুভ শক্তির জয়ের বার্তা নিয়েই পালিত হবে দীপাবলি বা দিওয়ালি। ‘দীপাবলি’ শব্দের অর্থই হলো প্রদীপের সারি।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবী শ্যামা শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতির প্রতীক। পুরাণে উল্লেখ আছে, দেবী শ্যামা দেবী দুর্গার এক শক্তিরূপ। সংস্কৃত ‘কাল’ শব্দ থেকে ‘কালী’ নামের উৎপত্তি। রাতেই অনুষ্ঠিত হয় শ্যামা পূজা, যা তন্ত্র ও পুরাণে প্রথম মহাবিদ্যা হিসেবে বর্ণিত।
ধর্মীয় আচার ও লোকবিশ্বাসে বহু স্থানে দেবীর উদ্দেশে বলিপ্রথা পালিত হয়। সন্ধ্যায় মৃত স্বজনদের আত্মার মঙ্গল কামনায় অনেকে নদী বা জলাশয়ে প্রদীপ প্রজ্বালন করেন।
ইতিহাস ও পুরাণে উল্লেখ আছে, ত্রেতাযুগে ১৪ বছরের বনবাস শেষে রাবণ বধের পর নবমীতে বিজয়ে শ্রীরাম অযোধ্যায় ফিরে আসেন। তাঁর আগমনে আনন্দে ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর মধ্য দিয়েই দীপাবলির সূচনা হয়।
অন্যদিকে বৈষ্ণব মতে, কার্তিক মাসে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মাতৃস্নেহের বন্ধনে আবদ্ধ হন, যা ভক্তদের কাছে মহিমান্বিত সময় হিসেবে বিবেচিত। এই মাসে ধর্মীয় আচরণে অক্ষয় ফল লাভের বিশ্বাস রয়েছে।
টাঙ্গাইলে পূজা ও দীপাবলি উদযাপনের প্রস্তুতি
টাঙ্গাইলের বিভিন্ন মন্দিরে আজ শ্রীশ্রী শ্যামা পূজা ও দীপাবলি উদযাপিত হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মন্দিরগুলো হলো—
-
বড় কালীবাড়ী
-
ছোট কালীবাড়ী
-
কাগমারী রানী দীনমনি মহাশশ্মান কালী মন্দির
-
প্যাড়াডাইস পাড়া মন্দির
-
কলেজ পাড়া মন্দির
-
আদালত পাড়া মন্দির
-
থানা পাড়া মন্দির
এছাড়াও বেশ কয়েকটি অস্থায়ী মণ্ডপে শ্যামা পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, পূজা, আরতি, প্রসাদ বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।