কামরাঙা অনেকের শৈশবের স্মৃতি জড়িয়ে থাকা একটি প্রিয় ফল। রাস্তার ধারের বিভিন্ন দোকানে কামরাঙা কেটে তার সঙ্গে ঝাল, লবণ বা কাসুন্দি মিশিয়ে সুস্বাদু করে বিক্রি করতে দেখা যায়। এই টক-মিষ্টি স্বাদ বেশিরভাগ মানুষের কাছেই লোভনীয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চিকিৎসকেরা সতর্ক করছেন, অসতর্কভাবে কামরাঙা খাওয়া স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেখতে আকর্ষণীয় এই স্টার ফ্রুট শরীরে প্রবেশ করার পর কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। একজন রিকশাচালকের উদাহরণ উল্লেখ করে চিকিৎসকেরা জানান, রাস্তার দোকান থেকে মাত্র পাঁচ টুকরা কামরাঙা খাওয়ার পর তার কিডনি মারাত্মক অবস্থায় চলে যায়। পরে প্রায় চারবার ডায়ালিসিস দেওয়ার পর তিনি সুস্থ হন।
গবেষণায় দেখা গেছে, কামরাঙায় উচ্চমাত্রায় অক্সালিক অ্যাসিড থাকে। ১০০ মিলিলিটার কামরাঙার জুসে প্রায় ০.৫০ গ্রাম অক্সালিক অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা দুর্বল কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ ছাড়া কামরাঙায় থাকা নিউরোটক্সিন কিডনি দুর্বল হলে শরীর থেকে বের হতে পারে না, ফলে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এর কারণে খিঁচুনি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এমনকি কোমায় চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটতে পারে।
চিকিৎসকদের আশঙ্কা, অনেক কিডনি রোগীই নিজের অসুস্থতা সম্পর্কে সচেতন নন। কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ স্পষ্ট না হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করেন। ফলে এমন রোগী অজান্তেই কামরাঙা খেলে গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—যাদের কিডনি দুর্বল বা যারা কিডনির অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত নন, তাদের কামরাঙা এবং কামরাঙা-জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত।











