আর মাত্র তিন দিন পর মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলেও সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাহিদার চেয়ে বেশি সংখ্যক কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কেন্দুয়ায় এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ১১ হাজার ৮৮৪টি। অথচ প্রস্তুত রয়েছে আরও ৮৮৪টি বেশি পশু, যা স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা যাবে।
উপজেলার খামারগুলোতে বর্তমানে ষাঁড় ৯,২২৮টি, গাভী ১২৪টি, বলদ ২টি, ছাগল ২,২৪৫টি ও ভেড়া ২৮৫টি কোরবানির জন্য প্রস্তুত। ১২টি নিবন্ধিত খামারের পাশাপাশি শতাধিক অনিবন্ধিত খামার ও গ্রামের গৃহস্থদের পোষা পশু এই হিসাবের বাইরেও রয়েছে।
সরেজমিনে খামার ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তে খামারিরা পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ পশু গোসল করাচ্ছেন, কেউ খাওয়াচ্ছেন। আবার অনেকে খামারে গিয়ে পশু দেখে যাচ্ছেন—যাচাই-বাছাইয়ের পরই কিনবেন বলে জানান তারা।
কান্দিউড়া ইউনিয়নের বেজগাতি গ্রামের রাজুর খামারের দেখভালকারী আক্তার হোসেন জানান, “আমরা কোরবানির জন্য ১৫টি গরু প্রস্তুত করেছি। প্রতিদিন দুই বেলা গোসল করানো হয়, খাওয়ানো হয় পুষ্টিকর খাবার। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বাজারে ভিড় কম ছিল, তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে।”
মোজাফরপুর ইউনিয়নের বড়তলা গ্রামের খামারি রাশিদা বেগম জানান, “প্রতি বছরই ছোট-বড় গরু কিনে লালন পালন করি। এবারও আশাবাদী ভালো দাম পাবো। ৩০ বছর ধরে এই কাজ করছি, পরিবারসহ সবাই এতে জড়িত।”
কেন্দুয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমান বলেন, “খামারগুলোতে নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কেউ যেন ক্ষতিকর উপায়ে গরু মোটাতাজা না করতে পারে, সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। প্রতিটি হাটে পশু চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “বাজার মনিটরিংসহ পশু স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। আশা করি, সুস্থ-সুন্দরভাবে এবার ঈদের কোরবানি সম্পন্ন হবে।”
এদিকে, বিদেশ থেকে পশু আমদানি না হওয়ায় দেশীয় খামারিরা এবার ভালো দামে গরু বিক্রির আশা করছেন। বৃষ্টির প্রভাব কাটিয়ে জমে উঠছে হাট, শেষ মুহূর্তে বিক্রির গতি আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন সবাই।