নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এখন জুয়ারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে।
এই স্বর্গরাজ্যে প্রতিনিয়ত বসছে কাইট, পয়সা আর ওয়ানটেন এর মতো জুয়ার আসর।
তবে পুলিশ বলছে, তাদের নজরদারি অব্যাহত আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের জোগসাজশেই এই জুয়ার আসর চলছে, ফলে এটি বন্ধ হচ্ছে না।
এতে করে ঘাটাইল আইনশৃংখলার অবনতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ঘাটাইলের মাকরাই চৌরিবাজার এলাকায় প্রায় এক মাস যাবত টাঙ্গাইলের কুখ্যাত জুয়ারু মো. জসিম খানের নেতৃত্বে এই জুয়ার আসর পরিচালিত হয়ে আসছে।
জানা যায়, বর্ষার সময় বাসাইল উপজেলার নথখোলা ও এর আশেপাশের এলাকায় বড় নৌকায় করে জুয়ার আসর পরিচালনা করে। তখন র্যাব পর পর দুই বার অভিযান চালায়।
কিন্তু ডাবল ইঞ্জিন নৌকায় করে দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় জুয়ারীরা।
এরপর তারা সখীপুরের বনাঞ্চলে আস্তানা করে বেশ কিছুদিন জুয়ার আসর পরিচালনা করে।
তার আগে দীর্ঘ ৯/১০ মাস ধরে মধুপুরের নেদুর বাজার ও ঘাটাইল-মধুপুর সীমান্ত এলাকার গারো বাজার এলাকায় ওয়ানটেন জুয়ার আসর পরিচালনা করে এই জুয়ারীরা।
সেসময় এই জুয়ার আসরে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে জুয়ারীরা এসে প্রথমে মধুপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একত্রিত হতো; পরে সময় সুযোগ বুঝে তাদের নিয়ে যাওয়া হতো জুয়ার আসরে।
বর্তমান পরিস্থিতি :
বর্তমানে ঘাটাইলের পাহাড়ি এলাকা মাকরাইয়ের চৌরিবাজার বেশ কিছুদিন ধরে চলছে ওয়ানটেন জুয়ার আসর।
আর এই আসরেও বরাবরে মতোই নেতৃত্বে রয়েছেন, মধুপুর এলাকার বেল্লাল ও শরীফ, ঘাটাইলের নওজেশ ও ফটিক, মির্জাপুরের সোহরাব মেম্বার, টাঙ্গাইলের ইকবাল।
এছাড়াও উপজেলার মাকরাই, কদমতলী, গাড়োবাজার এলাকায় দিনের বেলায় ঘাটাইলের মিনু ও টাঙ্গাইলের জসিমের নেতৃত্বে চলে কাইট ও পয়সা খেলা।
সাধারণ মানুষের কথা :
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, বেশ কয়েকদিন যাবত এলাকায় বাইরের লোকদের আনাগোনা বেড়েছে।
আর সন্ধ্যার পর থেকে সিএনজি, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার করে লোকজন আসে; খেলা শেষে ভোর রাতে চলে যায়।
আমরা বুঝতে পারতেছি এখানে জুয়ার আসর বসতেছে; কিন্তু কিছু বলতে পারতেছি না
এরমধ্যে ঘাটাইল থানায় কয়েকবার জানানো হয়েছে। তারা বলে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছিলাম, তারা কিছু পায়নি।
স্থানীয় আমির হোসেন সহ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
তাদের আরো অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন সহ প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই এই জুয়া খেলা চালানো হচ্ছে। তারা অতি দ্রুত এই খেলা বন্ধের দাবি জানান।
তারা আরো জানান, এই জুয়ার মালিকরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করায় স্থানীয় প্রশাসন ছাড়া কেউ জানছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশের বক্তব্য :
এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম পিপিএম মুঠোফোনে জুয়ার চলার কথা স্বীকার করে বলেন, গতকাল রাতে জুয়ারীরা বসছিলো, এটা সত্যই।
আমি খবর পাইছি, আমি পুলিশ পাঠাইছি, পায় নাই।
এসময় তিনি আরো বলেন, এটা আর শুনবেন না; কারণ হইছে, আমি যদি চাই জুয়া চলবে, আমি না চাইলে জুয়া চলবে কেমনে? সম্পাদনা – অলক কুমার