মির্জাপুরে গৃহবধূ সুফিয়া হত্যাকা-ের সাথে জড়িত স্বামী, ছেলে ও সুফিয়ার ভাগিনা তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। সুফিয়ার স্বামী আলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আরিফুল ইসলাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমুলী আদালত মির্জাপুর ও সুফিয়ার ছেলে শরিফুল ইসলাম এবং ভাগিনা স্বপন মিয়া পরের দিন শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) নওরিন মাহবুব সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমুলী আদালত মির্জাপুরে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জবানবন্দীতে তারা জানিয়েছে, নিহত সুফিয়া বিভিন্ন এনজিও থেকে কয়েক লাখ টাকা ঋন নিয়ে স্বামী আলাল উদ্দিন ও মাদকাসক্ত ছেলে শরিফুল ইসলামকে দিয়েছেন। কিন্তু আলাল উদ্দিন ও শরিফুলের পক্ষে এ ঋনের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব না। এসময় স্বামী ও ছেলে জানতে পারে, ঋণের উপর জীবন বীমা থাকায় ঋণ গ্রহীতা মারা গেলে ঋণ পরিশোধ করতে হবে না।
তাই সুফিয়ার স্বামী ও ছেলে ঋনের দায় থেকে মুক্তি এবং অন্য ভাইকে মামলায় জড়িয়ে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই মোতাবেক সুফিয়ার আপন ভাগিনা স্বপন মিয়াকে সাথে নিয়ে তাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে।
অন্যদিকে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সায়েদুর রহমান জানান, আলাল উদ্দিনের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার (৪৬) গত রোববার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। পরদিন এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় একটি সাধারণ ডাইয়েরী করা হয়। গত মঙ্গলবার সুফিয়া আক্তারের লাশ আজগানা গ্রামের আউলিয়া বিল থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সুফিয়ার বড় ভাই মেছের আলী বাদি হয়ে ওইদিনই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মির্জাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ এই হত্যাকা-ের সাথে নিহত সুফিয়া আক্তারের স্বামী আলাল উদ্দিন ও ছেলে শরিফুলের জড়িত থাকার প্রাথমিক কিছু প্রমান পান। এসময় পুলিশ সুফিয়ার স্বামী আলাল উদ্দিনকে আটক করে নানান ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকি। একপর্যায়ে স্বামী আলাল উদ্দিন ঘটনাটি পুলিশের কাছে স্বীকার করে। তারপর তার দেয়া তথ্য মতে ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০) এবং অপর সহযোগী নিহত সুফিয়া আক্তারের ভাই আব্দুল মোতালেবের ছেলে স্বপন মিয়াকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করি। সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।