টাঙ্গাইল সদর
,
সংবাদ দাতা
টাঙ্গাইলে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অর্ধবার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাটি অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায়, যা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক মাহফুজুল আলম মাসুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রবিউল ইসলাম, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, জেলা পর্যায়ের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার, সকল উপজেলা সমন্বয়কারী এবং জেলার ১২০টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানরা।
সভায় বক্তারা সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গ্রাম আদালতের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, গ্রাম আদালত সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি করতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উভয় পক্ষের মনোনীত দুইজন প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত গ্রাম আদালত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদেই বসে।
বক্তারা আরও জানান, গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজন নেই। বাদী ও বিবাদী নিজেরাই তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারেন, যা বিচারপ্রক্রিয়াকে সহজ, স্বচ্ছ ও স্বল্প ব্যয়ে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে।
গ্রাম আদালতে যেসব বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায় তার মধ্যে রয়েছে—চুরি, ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, দাঙ্গা, প্রতারণা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে উত্যক্ত করা, সম্পত্তি আত্মসাৎ, পাওনা টাকা আদায়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ, গবাদিপশু সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণ, কৃষিশ্রমিকের মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়সহ বিভিন্ন সামাজিক বিরোধ।
বক্তারা বলেন, গ্রাম আদালত সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিচারব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে নারী, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুত, কম খরচে ও কার্যকর বিচার নিশ্চিত করাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির সুযোগ সম্প্রসারণে সরকার ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।











