নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসবে টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দল চ্যাম্পিয়ন ও শহরের সৃষ্টি একাডেমিক স্কুল রানার্সআপ হয়েছে।
‘যোগ দাও যুক্তির মেলায়’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার সকাল দিনব্যাপী শহরের বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসবকে কেন্দ্র করে বিবেকানন্দ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্ষুদে বিতার্কিকদের মেলা বসেছিলো।
বিকেলে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন মুহাম্মদ উমর ফারুক।
তিনি বলেন, আজকে যে তরুনরা বিতর্কে অংশ নিচ্ছে তারাই আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দিবে।
বিতর্ক মানুষকে যৌক্তিক যুক্তি নির্ভর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গঠনে যুক্তির বিকল্প নাই।
যুক্তি মানুষকে আলোকিত করে। যুক্তি মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করে। যুক্তি নির্ভর মানুষ মিথ্যা, মাদককে গ্রহণ করে না। সবাইকে যৌক্তিক মানুষ হতে হবে।
অপর অতিথি বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে বিতর্কে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ যারা বিতর্কে অংশ নিচ্ছো।
তোমরাই আগামী দিনে বড় হয়ে দেশের সেবা করবে। আমরা প্রতিদিন যেন, ভালো কাজ করি। ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে টাঙ্গাইল বন্ধুসভার উপদেষ্টা জিনিয়া বখ্শ বক্তব্য রাখেন।
সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভার সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আহমেদ শেরশাহ।
পরে অতিথিরা চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ দল এবং বারোয়ারি বিতর্কে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
চ্যাম্পিয়ন বিন্দুবাসিনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ফাবিহা জারিন খান শ্রেষ্ঠ বক্তা হন। এই স্কুল দলে অন্য দুই বিতার্কিক ছিলেন মাইশা মেহেজাবিন ও ইরিনা ইনছাব ইরা।
রানার্সআপ সৃষ্টি একাডেমিক স্কুল দলের হয়ে বিতর্কে অংশ নেন নুসরাত জাহান আফরিন, উম্মে হানী ও নুসরাত কবীর।
বারোয়ারি বিতর্কে প্রথম হন ভারতেশ্বরী হোমসের মাইশা বিনতে জাহাঙ্গীর।
এর আগে সকালে –
বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধন করে সরকারি মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুজ্জামান মিয়া বলেন, বিতর্ক চর্চার মধ্য দিয়েই যুক্তি নির্ভর আগামী প্রজন্ম গড়ে উঠবে।
যে প্রজন্মের হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতিতে উন্নত হয়ে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনত হবে।
অনুষ্ঠানে মাদকের কুফল সম্পর্কে বলেন, চিকিৎসক কল্যানময় দাস। তিনি বলেন, মাদক সুস্থ্য জীবন কেড়ে নেয়।
মাদকের কারণে অনেক মেধাবী মানুষ ধ্বংস হয়ে যায়। কৌতুহলেও কখনো মাদক গ্রহন করা উচিৎ না; মাদক শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক বিপর্যয় ডেকে আনে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- প্রথম আলো’র সহকারী বার্তা সম্পাদক রাশেদুল আলম রাসেল।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইলে কর্মরত প্রথম আলো’র নিজস্ব প্রতিবেদক কামনাশীষ শেখর।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন, বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক রেনু আক্তার ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আহমেদ শেরশাহ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান –
সকাল থেকেই বিভিন্ন স্কুলের বিতার্কিকেরা উৎসবে আসতে শুরু করে।
উদ্বোধনের আগে তারা বিতর্ক বিষয়ক আড্ডায় মেতে উঠে বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে।
পরে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠির শিল্পীদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
উৎসবে টাঙ্গাইলের ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
এগুলো হলো- বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয়, টাঙ্গাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, কালেক্টরেট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়, সন্তোষ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ভারতেশ্বরী হোমস, বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, সৃষ্টি একাডেমিক স্কুল, মির্জাপুর কদিমধল্লা ডক্টর আয়েশা রাজিয়া খন্দকার স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
বিচারক হিসেবে যারা ছিলেন –
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন, সরকারি সা’দত কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সরকারি এমএম আলী কলেজের সরকারি অধ্যাপক সোলায়মান হোসেন, আবু সাঈম, সরকারি কুমুদিনী কলেজের প্রভাষক রেখা আক্তার, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা খন্দার নিপুন হোসেন, মওলানা ভাসানী আদর্শ কলেজের প্রভাষক মিলন মাহমুদ, গোহালিয়াবাড়ি ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষক ফিরোজ আদনান, টাঙ্গাইল জেলা ডিবেটিং সোসাইটির সমন্বয়ক রাসেল আদনান ও নাবিলা হোসেন, সরকারি সা’দত কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি জারিন তাসনিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার শাকিব।