২০২১ সালে বাংলাদেশ শিল্প সুবিধার আওতায় বিশ্ববাজার থেকে ১৮ লাখ ১৮ হাজার টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছে, যা চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশে এসেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই আমদানির ৮৮% নিয়ন্ত্রণ করেছে চারটি প্রতিষ্ঠান—টিকে গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপ।
ভোজ্যতেল আমদানিতে শীর্ষ চার প্রতিষ্ঠান
১. টিকে গ্রুপ:
- ২০২১ সালে ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩৬৩ টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছে।
- মোট আমদানির ৩০.৩৩%।
- শুল্কায়ন মূল্য: ৫,২৪৯ কোটি টাকা।
- স্থানীয় বাজারে পুষ্টি ব্র্যান্ড নামে সরবরাহ।
2. মেঘনা গ্রুপ:
- ৪ লাখ ১১ হাজার ৯২ টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছে।
- মোট আমদানির ২২.৬২%।
- শুল্কায়ন মূল্য: ৩,৯৬৯ কোটি টাকা।
- ফ্রেশ ব্র্যান্ডের মোড়কে বাজারজাত।
3. সিটি গ্রুপ:
- ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৫২০ টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছে।
- মোট আমদানির ১৯.১২%।
- শুল্কায়ন মূল্য: ৩,২৮০ কোটি টাকা।
- তীরও সান ব্র্যান্ডের তেল বাজারে সরবরাহ।
4. এস আলম গ্রুপ:
- ৩ লাখ ২ হাজার ৮৪৮ টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছে।
- মোট আমদানির ১৬.৬৫%।
- শুল্কায়ন মূল্য: ২,৯৬১ কোটি টাকা।
ভোজ্যতেল আমদানির উৎস ও বাজার প্রবণতা
বাংলাদেশ মূলত মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে *পরিশোধিত পাম অয়েল* আমদানি করে, যা ২০২১ সালে ১২ লাখ ১৬ হাজার টন ছিল। অপরিশোধিত *সয়াবিন তেল* আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার টন, যার প্রধান উৎস ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা।
ভোজ্যতেল বাজারে নতুন প্রতিযোগীরা
এই চার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড (বিইওএল), বসুন্ধরা, গ্লোব, সেনা এডিবল অয়েল, মজুমদার গ্রুপ* ইত্যাদি। *রূপচাঁদা* ব্র্যান্ডের তেল সরবরাহকারী বিইওএল ২০২১ সালে ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩০ টন সয়াবিন তেল আমদানি করেছে। নতুন সংযোজন *রূপসা এডিবল অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড* ২০২১ সালে ১৭ হাজার টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছে।
ভবিষ্যৎ বাজার পরিস্থিতি
সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, একসময় দেশে ৭৫টি তেলসংশ্লিষ্ট কোম্পানি ছিল, কিন্তু প্রতিযোগিতার কারণে অনেকেই দেউলিয়া হয়ে গেছে। বাজার টিকে রাখার জন্য সরকার *ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের* মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে।
উপসংহার
বাংলাদেশের ভোজ্যতেল বাজারে শীর্ষ চার প্রতিষ্ঠান আধিপত্য বজায় রাখলেও নতুন প্রতিযোগীদের আগমনে বাজারের গতিশীলতা পরিবর্তন হতে পারে। সরকারিভাবে মনিটরিং ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ নীতির ফলে সামগ্রিক বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে।