পিরোজপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে হামলা-পালটা হামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মো. ইমরান শেখ (২৩), শাহনেওয়াজ অভি (২৬) এবং মো. মুঈন উদ্দিন (২৭) এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মুসাব্বির মাহমুদ সানি (২৯) এবং তার ভাই সানজিদের (১৯) মধ্যে হামলা-পালটাহমলা হয়।
এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মুঈন উদ্দিন বলেন, ‘সাধারণত আমরা তারাবির নামাজ শেষে পুরান বাসস্টান্ডে চা খেতে আসি, আজকে হঠাৎ কোথা থেকে সানি এসে আভিকে বাজে কথা বলে। এক সময় ওরা আমাদের ওপর হামলা করে। এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সানির অভিযোগ, ‘হামলাকারীরা প্রথমে তাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করে। যখন তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন, তখন তার ভাই সানজিদকেও মারধর করা হয়।’ এ হামলায় সানির পিঠ ও হাতে এবং সানজিদের গলা ও পায়ে আঘাত লেগেছে।
এ বিষয়ে শাহনেওয়াজ অভির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মুসাব্বির মোহম্মদ সানি জুলাই বিপ্লবের সময় একদিনও আন্দোলন করে নাই। ফেসবুকে পোস্টও দেয়নি এবং তৎকালীন পিরোজপুরে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাস রেজাউল করিমের সঙ্গে মিশে আমাদের সব তথ্য পাচার করছে। যার সমস্ত ডকুমেন্ট আমরা পেয়েছি ৫ আগস্ট-এর পরে। নিজেরাই সমন্বয়ক কমিটি তৈরি করে পিরোজপুরে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করতে থাকে। আমরা বাধা দিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আর থাকতে না পেরে সে ঢাকায় গিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যোগদান করে।
তিনি আরো বলেন,
‘আমরা পুরাতন বাসস্টান্ডে বসে একসাথে চা খাচ্ছিলাম হঠাৎ এসে আমাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। সে এর আগেও ১৭ই সেপ্টেম্বর শিল্পকলায় হামলা করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, হান্নান মাসুদ ও রিয়ান ভাই। তাদের সামনেই আমাদের ছোট ভাই ইমরানের উপর হামলা করে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সানি তারাবির নামাজ শেষে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পর ৫-৭ জনের একটি সশস্ত্র দল লোহার পাইপ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আকস্মিক হামলা করে।
হামলার খবর পেয়ে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রাজীব পাইক জানান, ‘আহতদের মধ্যে সানির আঘাতের পরিমাণ বেশি। এক্সরে রিপোর্টের মাধ্যমে তার আঘাতের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।’পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুস সোবাহান জানান, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর যথাযোগ্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সমাজের বিশিষ্টজনরা এ ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।