মধুপুর প্রতিনিধি : মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্প্রতি ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে।
সারা ক্যাম্পাস সুশীতল ছায়ার আওতায় আনার লক্ষ্যে যখন গাছ লাগানোর কর্মসূচিতে অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে, অনেকে গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
ঠিক তখনই অনেকটা নির্দয় ভাবেই হাসপাতালের ক্যাম্পাসের প্রায় ১০০ ঘনফুটের দুই মেহগনি গাছ সবার অগোচরে কেটে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এই ঈদের ছুটিতে আরও ৭/৮ টি কাটার অশুভ পাঁয়তারা চলার শঙ্কার কথা শোনা গেছে।
অনুসন্ধানে যা জানা যায় –
মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক এলাকা (কোয়ার্টার) থেকে পর পর দুই দিন (গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল) দিন দুপুরে অন্তত ২০ বছর বয়সী প্রায় ১০০ ঘনফুট কাঠের দুটি মেহগনি গাছ উধাও হয়ে গেছে।
গাছ দুটি কাটা নিয়ে নানা লুকোচুরি হচ্ছে। তবে কাটার আগেই অনেকে বিষয়টি জানতেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
সরকারি গাছ কাটার নিয়ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করার পর এমন ঘটনা রহস্যজনক।
মধুপুর বন এলাকার সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোহম্মদ আবু সালেহ জানান, সরকারি গাছ কাটার আবেদনের প্রেক্ষিতে বন বিভাগ থেকে দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর অকসনে গাছ বিক্রি করতে হয়।
মধুপুর হাসপাতাল থেকে কয়েকদিন আগে এ নিয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, দিনে কাটা হলো অথচ রাতের উল্লেখ করে জিডির ঘটনায় গাছ লাপাত্তা হওয়ার বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার তিনদিন পর মধুপুর থানায় একটি জিডি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিন এ জিডি করেছেন।
জিডি নম্বর ১৪৬৪, তারিখ ৩০ এপ্রিল। এতে বলা হয়েছে গত ২৯ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৩টা থেকে সকাল ৭টা এর মধ্যে কে বা কারা গাছ দুটি কেটে নিয়ে গেছে; ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।
অথচ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, গ্যারেজ ও ড্রাইভারের আবাসস্থলসহ দুটি আবাসিক ভবনের ১০ গজের মধ্যে একটি গাছ কাটা হয়েছে।
আরেকটি প্রসূতি সেবা বিভাগের ২০/২৫ গজ উত্তরে আবাসিক অন্য একটি ভবনের দেয়ালের খুব কাছে ছিল। কেটে গোড়া ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
আবাসিক ভবনের এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গাছ দিন দুপুরে কাটা হয়েছে, শ্রমিক দিয়ে কাটা হয়েছে; কর্তৃপক্ষের প্রধান কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া এ কাজ হতে পারেনা।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য –
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ইউএইচএন্ডএফপিও’র সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও) ডা. সাইদুর রহমান বলেন, বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া সরকারি গাছ কাটা যায় না।
তিনি ৩০ এপ্রিল সকালে ঘটনাটি জেনেছেন। জানার পর তাৎক্ষণিক থানার ওসির সাথে কথা বলে আরএমও কে দিয়ে জিডি করানো হয়েছে।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন খান জানান, আমাকে জানানোর পর আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।
সম্পাদনা – অলক কুমার