মধুপুর প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের মধুপুরের কুড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা, মাইক ভাঙচুর ও কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলায় ১৫জন আহত হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় পোস্টার লাগাতে বাঁধাদানের অভিযোগ উঠেছে।
আগামী ১৫ জুন মধুপুর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এতে কুড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ফজলুল হক সরকার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবির চশমা প্রতীকে, আজহারুল ইসলাম রাজু আনারস প্রতীকে, সুমন মৃধা ঘোড়া প্রতীকে ও মোটরসাইকেল প্রতীকে আব্দুস সালাম নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরো পড়ুন – মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলা : সাবেক মেয়র মুক্তির জামিন স্থগিত
সরেজমিনে যা পাওয়া যায় –
সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের নিজ এলাকা ছাড়া কোথাও কোন নির্বাচনী পোস্টার দেখা যায়নি।
এছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। চশমা প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপনে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগে জানা গেছে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান কুড়াগাছা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক সরকারের লোকজন ইউনিয়নের চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবিরকে হত্যার হুমকি, তেঁতুলতোলা গ্রামে প্রচারণার সময় মাইক ভাঙচুর, কাউচীর বাজার, গরম বাজার ও পিরোজপুর রামজীবন উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে কর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছে।
হামলায় মানিক মিয়া (২৫), মোশারফ হোসেন (২৭) লোকমান হোসেন, সাব্বির (২৬) আব্দুল মান্নান (৪০) নাসির উদ্দিন (২৬) আয়নাল হকসহ ১৫ জন কর্মী আহত হয়েছে।
আহতদের এলাকায় অবরুদ্ধ করে রাখায় ভয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন – ভোট স্থগিত হলো মধুপুরের সেই ইউপি’তে
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হুমকিতে ইউনিয়নের পিরোজপুর বাজারের নির্বাচনী কার্যালয়টি সরিয়ে বাড়ির কাছে আনলেও সেটিও তালা মেরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগকারী প্রার্থীদের বক্তব্য –
চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবির বলেন, নির্বাচনে প্রচারণায় বাঁধা দিচ্ছে নৌকার প্রার্থীর নেতাকর্মীরা।
আমার কর্মীদের যেখানেই পাচ্ছে সেখানেই তাদের উপর হামলা করা হচ্ছে।
গতকাল প্রচারণা চালানোর সময় নৌকার ক্যাডার বাহিনীরা হাতুরি ও লাঠি দিয়ে হামলা চালিয়ে ১৫ জন আহত করেছে; ভয়ে আহতরা হাসপাতালে যেতে পারছে না।
প্রাণনাশের হুমকিসহ কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনসহ হামলার ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও থানায় অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি; বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতা ভুগছি।
আরো পড়ুন – নাগরপুরে যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ
অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জানান, সেখানেই কর্মীরা প্রচারণা করছে সেখানেই নৌকার লোকজন হামলা করছে। মাইক ভাঙচুর, পোস্টার ছিড়ে ফেলে দিচ্ছে।
কত অভিযোগ দিবো? একটা অভিযোগেরও ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কর্মকর্তা।
নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর বক্তব্য –
কুড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলুল হক সরকার বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন; আমার কোন কর্মীরা এধরনের ঘটনা ঘটায়নি।
প্রশাসনের বক্তব্য –
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, নির্বাচনে হামলার কোন ঘটনার অভিযোগ পায়নি।
এছাড়া নির্বাচন অফিস থেকেও কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মধুপুর উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা করুনা সিন্ধু চাকলাদার বলেন, কুড়াগাছা থেকে একটি অভিযোগ পাওয়ার পরই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় কপি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অভিযোগের পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সম্পাদনা – অলক কুমার