মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি : মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তারেক।
র্যাগিং এর শিকার শিক্ষার্থী মো. তারেক প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছে।
দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) নিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের মাধ্যম দিয়ে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ঐ নবীন শিক্ষার্থী।
অভিযোগ পত্রে যা উল্লেখ করা হয় –
সোমবার (২৮ মার্চ) ক্যাম্পাসের নিকটস্থ সন্তোষের আরিফনগরে অবস্থিত একটি ছাত্রাবাসে, দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ইএসআরএম বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম, আজমাইন, সেলিম, মাহিন, রাহাত এবং সম্ভাব্য ফার্মেসি বিভাগের সাফিসহ আরো কয়েকজনের দ্বারা র্যাগিং এর শিকার হয়েছে সে।
এর ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে কঠিন হবে উল্লেখ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে ঐ শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী ঐ শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে র্যাগিং সম্পর্কে জানার পর তার মধ্যে এক আতঙ্ক বিরাজ করে।
সোমবার (২৮ মার্চ) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববদ্যালয়ের পাশের এলাকায় তার মেসের সিনিয়রদের আচরণে সে আরো শঙ্কিত ও আতঙ্কিত হয়।
এক পর্যায়ে সে শোনে, মেসের মেইন গেট তালা দিয়ে তাকে র্যাগিং করা হবে।
পরে সেই শিক্ষার্থী মেসের বিল্ডিং এর ছাদে উঠে পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে এবং সে নিচে পড়ে যায়।
এরপর সে আশে পাশের কিছু মানুষ দেখে তাদের কাছে সাহায্য চায়। এরপর কি ঘটে ছেলেটি আর বলতে পারেনি।
আরো যা জানা যায় –
তবে ঘটনাক্রমে জানা যায়, আশপাশের মেস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী অনেকটা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রক্টর প্রফেসর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জায়েদুল হাসান এর তত্ত্বাবধানে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসক ছেলেটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই ছাড়পত্র দিয়ে দেয়।
এ ঘটনার পর ২৯ মার্চ (মঙ্গলবার) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ঐ শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেন। সে সময় কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জানায়নি ঐ শিক্ষার্থী।
পরবর্তীতে বিকালে অভিযোগপত্র জমা দেয়ার সময় তাকে মারধর করা হয়নি বলে জানায় সে; তবে ভয়ে মানসিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছে বলে সে জানায়।
অভিযুক্তদের কথা –
র্যাগিং এর বিষয়ে অভিযুক্ত ইএসআরএম বিভাগের শামীম ও রাহাত জানায়, তারা ঐ রাতে এমন কোন ঘটনা ঘটায়নি।
বরং প্রথম বর্ষের ঐ শিক্ষার্থী আগে থেকেই নিজ বিভাগের র্যাগিং নিয়ে ভীত ছিল। সে তাদের সাথে ২২ মার্চ থেকে থাকে।
সেদিন থেকে সোমবার পর্যন্ত ঐ শিক্ষার্থী ভালোভাবেই তাদের সাথে ছিলো; এমনকি সে মেস থেকে বের হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও তারা অবগত ছিলনা।
একপর্যায়ে তার রুমমেট তারেককে রুমে না পেয়ে সবাই মিলে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
র্যাগিং তো দূরের কথা, কি কারণে তারেক ভয় পেয়ে মেস থেকে বেড়িয়ে গেছে, তাও তারা জানেনা বলে জানান তারা।
প্রক্টরের বক্তব্য –
এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
অন্যদিকে তারেককে শারীরিক ও মানসিক শক্তি দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মো. রোকুনুজ্জামান। সম্পাদনা – অলক কুমার