নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান পরিচালনার সময় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত সেনা কর্মকর্তা তানজীম সারোয়ার নির্জনের লাশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় টাঙ্গাইলে দাফন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পৌর এলাকা করের বেতকা গ্রামে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাাফন করা হয়।
এর আগে বাদ আসর স্থানীয় বোয়ালী মাদ্রাসা মাঠে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন – কেন স্থায়ী জামিন পেলেন সাবেক মেয়র মুক্তি?
এতে জিওসি ১৯ পদাদিক ডিভিশন ও এরিয়া সদর দপ্তর ঘাটাইল এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল হুসাইন মোহাম্মদ মাসীহুর রহমান ও ৯৮ সংমিশ্রিত ব্রিগেড কমান্ডারসহ সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় সর্বস্তরের মানুষ জানাজা নামাজের অংশ নেয়।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সেনা কর্মকর্তা তানজীম সরোয়ার নির্জনের মরদেহ হেলিকপ্টারযোগে টাঙ্গাইল পৌঁছে।
জেলা সদরে সার্কিট হাউজের সামনে হেলিপ্যাডে মরদেহ পৌঁছলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বীর এই সেনা সদস্যের মরদেহ গ্রহণ করেন।
এরপর তারা নির্জনের মরদেহ পৌর এলাকা করের বেতকা গ্রামে বাড়িতে নিয়ে গেলে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের তৈরি হয়।
নির্জনের লাশ দেখে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এর আগে তানজীর সরোয়ার নির্জনের মৃত্যুর খবর পৌঁছলে টাঙ্গাইলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
সর্বস্তরের মানুষ করের বেতকা গ্রামে নির্জনের বাসায় ভিড় জমায়।
দুপুরের পর থেকেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা নির্জনের বাড়ির সামনে অবস্থান নিলেও লোকজনের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় তাদের।
নির্জনের প্রতিবেশীদের ভাষ্য –
নির্জন খুবই শান্ত স্বভাবের ছেলে। কখনো কারো সাথে খারাপ আচরণ করতে দেখা যায়নি বলে জানায় প্রতিবেশীরা।
সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত তানজীর সরোয়ার নির্জনের বাবা সরোয়ার জাহান জানান, ভোর ছয়টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদের বিষয়টি জানানো হয়।
আরো পড়ুন – টাঙ্গাইলে সেতু এনজিও’র সহকারী হিসাবরক্ষকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ
ছেলের এমন খবরে আমরা হতবিহবল হয়ে পড়ি। নির্জনের মা খবরটি শোনার পর থেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে বারবার।
তিনি এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। দুই ভাই বোনের মধ্যে তানজীম সরোয়ারের নির্জন হচ্ছে ছোট।
আইএসপিআর জানায় –
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) জানায়, সোমবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চকরিয়া উপজেলার অন্তর্গত ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতির খবর পেয়ে চকরিয়া আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে যায়।
পরে রাত ৪টার দিকে মাইজপাড়া গ্রামে অভিযান পরিচালনা করার সময় ৭-৮ সদস্যের একটি ডাকাত দল সেনা টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার সময় লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন (২৩) ডাকাত দলের কয়েকজনকে তাড়া করেন।
এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জনের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করলে গুরুতর আহত হয় এবং এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।