গোপালপুর সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের গোপালপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
ওই গৃহবধূ “ইতি” উপজেলার হাদিরা দক্ষিণপাড়া গ্রামের আলামিনের স্ত্রী ও ঝাওয়াইল গ্রামের মো. দুলাল তালুকদারের মেয়ে।
পরিবারেরর অভিযোগ, ইতিকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে তার শ্বশুরবাড়ি।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টায় উপজেলার হাদিরা দক্ষিণপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জনপ্রতিনিধি, প্রতিবেশী ও পরিবারের বক্তব্য –
স্থানীয় ইউপি সদস্য সবুর হোসেন জানান, ইতি ছিলেন আল আমীনের দ্বিতীয় স্ত্রী।
তিন বছর আগে একই গ্রামের মুত্তালিব মিয়ার কন্যা সেলিনাকে বিয়ে করেছিলেন আল আমীন।
পরে সেলিনার সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
১ম স্ত্রী সেলিনার বাবা মুত্তালিব হোসেন জানান, কন্যা সন্তান প্রসব করায় প্রায়ই সেলিনাকে মারধর করতো আল আমীন ও তার পরিবার।
নির্যাতন সইতে না পেরে নাবালক কন্যাসহ সেলিনা বাবার বাড়ি চলে আসেন। পরে ডিভোর্স হয়।
তারপর আল আমীন ইতিকে বিয়ে করে।
পড়শী হাসিনা বেগম জানান, পাঁচ মাস আগে আল আমীন (৩৫) যৌতুক নিয়ে ঝাওয়াইল গ্রামের দুলাল মিয়ার কন্যা ইতি (১৮)কে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
ইতির বাবা দুলাল তালুকদার জানান, ইতি মেধাবী ছাত্রী ছিল। গতবার ফরম ফিলাপ করার পরেও তাকে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে দেয়নি আল আমীন।
মেয়েটি কলেজে পড়ার জন্য বায়না ধরেছিল। এজন্য তাকে প্রায়ই মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করা হতো।
শনিবার দুপুরে ইতি পড়ালেখার কথা তুলতেই তাকে নির্যাতন করা হয় বলে ফোনে বাবাকে জানায়।
এসময় তিনি জানান, পরে মেয়ের জামাই আলামিনের সাথে ফোনে কথা হয়।
আলামিন আমার মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ফোন কেটে দেয়।
এর ঘন্টাখানেক পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে মেয়ের মৃত্যু খবর জানতে পারি।
তিনি আরও জানান, ওর শ্বাশুড়ি ও আলামিন মিলে মেয়েটাকে শারীরিক নির্যাতন করে মেরে ফেলে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
এদিকে ইতির স্বামী আল আমীন জানায়, ইতি খুব অভিমানী মেয়ে ছিল। সামান্য কথাকাটির ঘটনায় সে এমন সর্বনাশা কান্ড ঘটিয়েছে।
এ ঘটনায় গোপালপুর থানা ভারপ্রাপ্ত (ওসি) তদন্ত কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম সিদ্দিকী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মুঠোফোনে জানান, ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা। এই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সম্পাদনা – অলক কুমার