বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ের বাঁধে আবারো ভাঙন; নিম্নমানের কাজের অভিযোগ চেয়ারম্যানের

কালিহাতী সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে দ্বিতীয় রক্ষা গাইড বাঁধের পুনঃনির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই ফের ভাঙন শুরু হয়েছে।

ভাঙনের ফলে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ১৫০ মিটার বাঁধ ও বাঁধের অভ্যন্তরে থাকা পাকা দালানসহ বেশ কয়েকটি বসতভিটা।

ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে বঙ্গবন্ধু সেতুসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম।

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের গরিলাবাড়ি এলাকায় বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব দ্বিতীয় রক্ষাগাইড বাঁধের ১৫০ মিটার অংশ ভেঙে বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে।

জানা গেছে, যমুনা নদীর ভাঙন থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষার্থে ২০০৪ সালে সেতুর পূর্ব পাড়ের দক্ষিণ পাশে কার্পেটিং ও সিসি ব্লকের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ করা হয় দ্বিতীয় রক্ষা গাইড বাঁধ।

দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুর্বল বাঁধে ২০১৭ সালে আঘাত হানে যমুনা।

অল্প সময়ের ব্যবধানে বাঁধ ও বাঁধের অভ্যন্তরের কয়েক শতাধিক বসতভিটা গ্রাস করে নেয় আগ্রাসী যমুনা।

পরে পুনঃ বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় সেতু কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৫০ মিটার এই গাইড বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করে ‘রানা বিল্ডার্স এন্ড সহিদ ব্রাদার্স’ নামের দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু প্রথম থেকেই গাইডবাঁধ নির্মাণে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করে আসছিল স্থানীয়রা।

শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পুনঃনির্মাণ বাঁধটির মধ্যবর্তী অংশে ভাঙন দেখা দেয়।

অল্প সময়েই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় ১৫০ মিটার বাঁধ ও বাঁধের অভ্যন্তরে থাকা পাকা দালানসহ তিনিটি বসতভিটা।

এর আগেও চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুতে ভাঙনের কবলে পড়ে বাঁধটির শেষ প্রান্তের ৫০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের অভিযোগ –

স্থানীয়রা জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু দ্বিতীয় রক্ষাগাইড বাঁধের কাজ শেষ না হতেই ভাঙন শুরু হয়েছে।

দুইবারের ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়েছে।

বাঁধ নির্মাণের শুরু থেকেই সেতু কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করলেও তা শুনেনি সেতু কর্তৃপক্ষ।

গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার বলেন, বাঁধ নির্মাণে নিম্নমানের কাজ করা হয়েছে।

যে টাকা ধরা হয়েছিল বাঁধ নির্মাণে তার অর্ধেক টাকাও ব্যয় হয়নি।

সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা এবং ঠিকাদার যোগসাজস করে বাঁধ নির্মাণের টাকা আত্মসাৎ করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল কবির পাভেল বলেন, ভাঙন ঠেকাতে প্রতিনিয়ত কার্যক্রম পরিচালানা করা হচ্ছে।

যখন বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয় তখন নদীর গভীরতা ছিল ৪০ মিটার।

কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে নদীর গভীরতা দাড়ায় ৪৫ মিটারে। ফলে সেখানে ভাঙন শুরু হয়েছে। সম্পাদনা – অলক কুমার