টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অনিয়মের অভিযোগ উঠা প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাথরঘাটা-তক্তারচালার সেই রাস্তা গাইডওয়ালসহ ভেঙে পড়েছে। সড়কের খলিয়াজানী কালী মন্দির, ভোলা নাথের বাড়ির সামনে এবং ব্রিজের উত্তরপাশের তিনটি অংশে প্রায় একশো মিটার পাকা রাস্তা ভেঙে পড়েছে। এতে সড়কে যানচলাচল হুমকির মধ্যে পড়েছে। এদিকে রাস্তা নির্মাণের বছর না পেরুতেই ভেঙে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এই রাস্তা নির্মাণের শুরুতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী। এতে ঠিকাদারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয়দের মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের শুরুতে ৬ কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার ৪২৯ টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ১২ ফুট প্রস্থ পাথরঘাটা-তক্তারচালা রাস্তাটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। রাস্তাটি বাস্তবায়নের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈয়দ মজিবুর রহমান অ্যান্ড অরনি এন্টারপ্রাইজ (জেভি)। রাস্তার কাজ শুরু হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া, বিটুমিন ব্যবহারসহ রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক কারচুপির আশ্রয় নেয় তারা। এছাড়া রাস্তার গাইড ওয়ালের নীচ থেকে মাটি কেটে সড়কে দেয়া এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে সড়কের পাশে কৃষকের আবাদি জমির মাটি কেটে নেয় তারা। তাছাড়া সিমেন্ট ও বালু মিশিয়ে জিও ব্যাগ ভরে রাস্তার পাশে ফালনোর কথা কথা থাকলেও শুধু বালু ভর্তি বস্তা ব্যবহার করে তারা। আর এসব অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারের লোকজন তাদের ওই সময়ে মারধরও করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে রাস্তা নির্মাণে বছর না পেরুতেই তিনটি অংশে গাইড ওয়ালসহ পাকা রাস্তা ভেঙে পড়ায় সদরে বংশাই নদীর উপর স্থাপিত একাব্বর হোসেন এমপি ব্রিজ হয়ে পাথরঘাটা সখিপুর সড়কে যানচলাচলসহ হুমকির মধ্যে পড়েছে। এলাকাবাসী জানান, এই রাস্তা তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। যা স্থানীয় এমপি একাব্বর হোসেনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিন্মমানের কাজ করায় অল্পদিনের মধ্যে তা ভেঙে যাচ্ছে। কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলায় তাদের মারধরসহ তাদের নামে থানায় অভিযোগ দেয়া হয় বলে জানান। গাজেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা ইজ্জত আলী জনি, খলিয়াজানী গ্রামের বাসিন্দা দীপক দাস, অধীর শীল ও কার্তিক শীল অভিযোগ করেন বলেন, চোখের সামনে উন্নয়ন কাজে এত অনিয়ম হয়েছে প্রতিবাদ করায় তাদের মারধরসহ উল্টো থানায় তাদের নামে অভিযোগও দিয়েছে ঠিকাদার।
সৈয়দ মজিবুর রহমান অ্যান্ড অরনি এন্টারপ্রাইজের (জেভি) ঠিকাদার হিকমত মিয়া রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে বলেন, গাইডওয়াল তারা নির্মাণ করেননি। এটা পূর্বেই নির্মিত ছিল। পাকা রাস্তা ভেঙে গেলে মেরামত করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, রাস্তা ভেঙে গেলে ঠিকাদার মেরামত করে দেবে। না হলে তাদের জামানতের টাকা দেয়া হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।