০৯ ডিসেম্বর, নাগরপুর পাক-হানাদার মুক্ত দিবস

আজ সোমবার ৯ই ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার সূর্য সন্তানরা পাকিস্থানী বাহিনীর কবল থেকে নাগরপুর উপজেলাকে মুক্ত করে। নাগরপুরে উত্তোলন করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো উপজেলা। নাগরপুরের মানুষ মুক্তির স্বাদ পায়। যুদ্ধকালীন সময়ে টাঙ্গাইল জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার খবর দেশের সীমানা পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নানাবিধ কর্মসূচী গ্রহন করেছে।

স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে মুক্তিবাহিনীর বাইরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৃথক পৃথক বাহিনী গড়ে উঠে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনী অন্যতম। কাদেরিয়া বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের কাহিনী সেসময় দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। কাদেরিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনী যুদ্ধের শুরু থেকে টাঙ্গাইল সহ দেশের বিস্তৃর্ণ এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। সারাদেশের ন্যায় হানাদারদের দ্বারা ক্ষত-বিক্ষত টাঙ্গাইলের সর্বদক্ষিনে ধলেশ্বরী নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন নাগরপুরকে শত্রুমুক্ত করতে কাদেরিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনী বেশ কয়েকবার আক্রমন করলেও চূড়ান্ত সফলতা পেতে সময় লাগে ০৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর উপজেলার কেদারপুরে প্রায় ৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধা নাগরপুর থানা আক্রমনের জন্য সমবেত হয়। খবর পেয়ে হানাদার বাহিনী ২টি যুদ্ধ বিমান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর আক্রমন করে তাদের এ পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়। পিছু হটে মুক্তিবাহিনী শক্তি সঞ্চয় করে নাগরপুর থানা দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। অবশেষে আজকের এই দিনে কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানী কমান্ডার হুমায়ুন বাঙ্গাল, রবিউল আলম, সাইদুর রহমান, সবুর খান ও বাতেন বাহিনীর কয়েকটি কোম্পানীর যৌথ আক্রমনে পাক হানাদারদের বেশ কয়েকটি ট্যাংক ধ্বংস করে।

এ যুদ্ধে বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত পাক সেনা নিয়ে হানাদার বাহিনী নাগরপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়। নাগরপুর থানা স্থায়ীভাবে হানাদার মুক্ত হয়। সেদিন নাগরপুরবাসী ৯ মাসের দুঃখ বেদনা মূহুর্তেই ভূলে সমস্বরে জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মূখরিত করে।