আ’লীগ নেতার বালুঘাটের বেপরোয়া বালুবাহী ট্রাক কেড়ে নিল ছাত্রদল নেতার প্রাণ

বেপরোয়া বালুবাহী ট্রাক কেড়ে নিল ছাত্রদল নেতার প্রাণ। ছবি-১

নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের গোপালপুরে অন্তত ২০টি অবৈধ বালুঘাট থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি হচ্ছে।

এই ঘাটের সবগুলোই উপজেলা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।

আবার যে সকল জায়গায় বালু উত্তোলনের জায়গা সীমিত সেখানে পালি (সপ্তাহে দুই বা তিন দিন পর পর একেকজন) করে ঘাট চালায় নেতারা।

আর নেতাদের ঘাটের বালু বিক্রি করে বলে ট্রাক ড্রাইভাররা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালায় বলে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটারও অভিযোগ আছে।

এবার সেই ট্রাক রাজনৈতিক বিরোধী দল জাতীয়তাবাদী দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল ঝাওয়াইল ইউনিয়নের যুগ্ম-আহবায়ককে ধাক্কা দিয়ে মেরে ফেলে।

ওই নিহত ছাত্রদল নেতা হলো – টিটু খন্দকার (৩৬)।

সে উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক ও ভেঙ্গুলা গ্রামের ডা. খন্দকার মোস্তফা হাসানের ছেলে।

এ ঘটনায় টিটুর চাচা খন্দকার ইসমাইল হোসেন (৫৮) গুরুত্বর আহত হয়েছেন।

রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তারাকান্দি-ভূঞাপুর মহাসড়কের গোপালপুর উপজেলার গুলিপেচা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অর্জুনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী মোল্লা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টিটু তার চাচা ইসমাইলকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে টাঙ্গাইল পাসপোর্টের কাজ শেষে ভূঞাপুর হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

পথিমধ্যে তারাকান্দি-ভূঞাপুর মহাসড়কের গুলিপেচা এলাকায় ভূঞাপুরগামী বালুভর্তি ড্রামট্রাকের ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে চাচাকে নিয়ে ছিটকে পড়ে সে।

বেপরোয়া বালুবাহী ট্রাক কেড়ে নিল ছাত্রদল নেতার প্রাণ। ছবি-২

এতে টিটু খন্দকার ঘটনাস্থলে মারা যায় এবং গুরুত্বর আহত তার চাচা ইসমাইল।

পরে স্থানীয়রা টিটুর চাচাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ভূঞাপুর হাসপাতালে নিয়ে আসলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করলে সেখান থেকে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য –

এবিষয়ে অর্জুনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী মোল্লা বলেন, ঘাটের অভাব নাই।

বালুর ঘাটে খালি মানুষ মইরা যাইতাছে, আজকেও দুইজন মরছে। বালুর ট্রাক আবুল-তাবুল চালিয়ে মানুষের উপরে তুইলা দেয়।

ওই ঘাটটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাহবুব সাহেব চালান।

তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও অর্জুনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল আলম মাহবুব ঘাট পরিচালনার কথা অস্বীকার করে বলেন, এ ঘাটটি আমি না, ভূঞাপুর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বাবু পরিচালনা করেন।

এসময় তিনি আরো বলেন, যে আমার কথা বলেছে সে মিথ্যা বলেছে।

তবে এবিষয়ে কথা বলার জন্য ভূঞাপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মনিরুল ইসলাম বাবুর সাথে যোগাযোগ করা যায় নি।

পুলিশের বক্তব্য –

এ ঘটনায় উপজেলার হেমনগর পুলিশ ফাঁড়ির তদন্ত কর্মকর্তা (আইসি) মাহফুজ আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

একইসঙ্গে ঘাতক ড্রামট্রাকটি জব্দ করা গেলেও চালক পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সম্পাদনা – অলক কুমার