দেশের কৃষিপণ্যের বাজারে অর্থনীতির মৌলিক সূত্র এবার প্রমাণিত হচ্ছে ব্যর্থ। সাধারণত চাহিদার তুলনায় পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পিঁয়াজের বাজারে পরিস্থিতি বিপরীত। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত মৌসুমে প্রায় ৪ লাখ টন পিঁয়াজ অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে। এর পরও দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ টাস্কফোর্স মাঠে নামাচ্ছে।
টিসিবির তথ্যানুযায়ী, ২৯ অক্টোবরের তুলনায় ৫ নভেম্বর-এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পিঁয়াজ ৭৫ থেকে ১১০ টাকা, আদা ১৭৫ থেকে ১৮৫ টাকা এবং রসুন ১৬৫ থেকে ১৮০ টাকায় বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২,৯৩৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ৪৪ লাখ টন পিঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হঠাৎ দাম বাড়ার কারণে জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানাচ্ছে, নভেম্বরের শুরুতেই বৃষ্টির কারণে পণ্যটির দাম বেড়েছে। তবে শিগগিরই মুড়িকাটা পিঁয়াজ বাজারে আসলে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন রবিবার সচিবালয়ে পিঁয়াজের উৎপাদন, চাহিদা ও বর্তমান বাজারদর নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সিন্ডিকেট মজুতদারির বিরুদ্ধে বিশেষ টাস্কফোর্স পরিচালনা ছাড়াও আমদানি বাড়িয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইতিমধ্যে ট্যারিফ কমিশন পিঁয়াজ আমদানির সুপারিশ করেছে।
সাবেক সচিব ও ক্যাব প্রেসিডেন্ট এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, “কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও চাহিদা সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে পিঁয়াজের দাম বেড়েছে। আরও দুই মাস আগে পণ্যটি আমদানি করা উচিত ছিল।” তিনি আরও বলেন, “উৎপাদন বেশি থাকলেও পণ্যের অপ্রতুলতা তৈরি করা হয়েছে এবং এখন বাজারে দেশি পিঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না।”
বর্তমানে সরকারের লক্ষ্য পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা এবং কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।











