করোনা আক্রান্ত সাংবাদিকের বাড়িতে ইউএনও এবং ওসি’র উপহার

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসাধীন মির্জাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক ইনকিলাব ও ঢাকা টাইমসের প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেনের বাসায় উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছেন মির্জাপুরের ইউএনও এবং টাঙ্গাইলের ডিবি’র ওসি। এছাড়া তাঁরা বিভিন্ন সময়ে ফোন করেও তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ রাখছেন বলে জানা গেছে।

শনি ও সোমবার পৃথক প্রতিনিধির মাধ্যমে সিজনাল ফলসহ করোনায় আক্রান্ত রোগীর ঘরোয়া চিকিৎসার উপকরণসহ ডালি সাজিয়ে এই উপহার সামগ্রী পাঠান। তাদের পাঠানো ডালির মধ্যে রয়েছে মাল্টা, আপেল, আনারস, তরমুজ, কলা, বেল, পেঁয়ারা, খেঁজুর, লেবু, আদা, ট্যাং, চা ও চিনি।

শনিবার ইউএনও আবদুল মালেকের পক্ষে তাঁর অফিস সহায়ক মো. নজরুল ইসলাম এবং সোমবার দুপুরে ডিবি’র ওসি শ্যামল কুমার দত্তের পক্ষে মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনিল কুমার এই উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেন।

এদিকে করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিকের বাড়িতে ইউএনও এবং ডিবি’র ওসির উপহার সামগ্রী পাঠানোর খবরে তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মির্জাপুরের বরেণ্য দুই ব্যক্তিসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।

মির্জাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক দুর্লভ বিশ্বাস ও মির্জাপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মনোবল ধরে রাখা এই মূহুর্তে এই রোগের অন্যতম চিকিৎসা। ইউএনও এবং ডিবি’র ওসি উপহার সামগ্রী পাঠিয়ে এবং তাঁর খোঁজ রেখে সেই কাজই করছেন। এজন্য তাঁরা তাদেরকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান। সাংবাদিক নিরঞ্জন পাল, শামসুল ইসলাম সহিদ, ও এরশাদ মিঞা জানান, এতে সাংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিতবোধ করবেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মালেক বলেন, করোনা মহামারি যুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সাংবাদিকরা সামনের সাড়িতে থেকে কাজ করছেন। সাংবাদিক জাহাঙ্গীর করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা তার পাশে রয়েছি এবং থাকবো। একই কথা বলেন, টাঙ্গাইল ডিবি (দক্ষিণ) এর অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত। খুব শীঘ্রই তিনি সুস্থ্য হয়ে আবার করোনা যুদ্ধে শরীক হবেন বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে সাংবাদিকের বাড়িতে উপহার সামগ্রী পাঠিয়ে এবং প্রতিনিয়ত তার খোঁজ রেখে পাশে দাঁড়ানোয় ইউএনও আবদুল মালেক এবং ডিবি’র ওসি শ্যামল কুমার দত্তের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাকসুদা খানমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ব্যক্তিবর্গ এবং সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত তার খোঁজ রেখে সাহস জোগানোয় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ, গত ১১ মে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাংবাদিক জাহাঙ্গীর হোসেনের নমুনা সংগ্রহ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা। পরে ১৪ মে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে সাংবাদিকসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের দুইকর্মীসহ চারজনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকে তিনি নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।