গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচন : কে হচ্ছেন পৌর পিতা?

গোপালপুর সংবাদদাতা : আজ রোববার ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভার নির্বাচন।

কে যাচ্ছেন পৌর পিতা?

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

এ নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত নৌকা প্রতীক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র রকিবুল হক ছানা; বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রুবেল; আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (নারিকেল গাছ) প্রতীকে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেএম ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি বিদ্রোহী (জগ) প্রতীকে খন্দকার শাজাহান আলী।

গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচনে চলছে অনেক জল্পনা-কল্পনা; অনেক হিসাব-নিকাশ; রয়েছে দলীয় সমর্থন-অসমর্থন; রয়েছে ভোটারদের পছন্দ-অপছন্দ, পাওয়া না পাওয়ার হিসাব। আবার অনেক হিসাব নিকাশ পাল্টে দিয়েছে একটি হত্যাকাণ্ড।

এদিকে একটি হত্যাকাণ্ডের কারণে প্রশাসন রয়েছে কঠোর অবস্থানে। ঝুঁকি এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণসহ এলাকার চিহ্নিত ও সন্দেহভাজনদের প্রতি নজরদারী বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।

বিএনপি দলীয় প্রার্থীর অভিযোগ –

বিএনপি দলীয় প্রার্থীর অভিযোগ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নামে শুধু বিএনপি দলীয় বা সমর্থিতদের গ্রেপ্তার ও তাদের প্রতি নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই উপজেলার যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক দুলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কিন্তু আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা, অস্ত্র মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করছে; তাদের ধরা হচ্ছে না।

স্বতন্ত্র (আওয়ামী বিদ্রোহী) প্রার্থীর অভিযোগ –

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (নারিকেল গাছ) প্রতীকে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেএম ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী প্রার্থী ও তৈরি সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে কোথায় নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেয়নি। প্রকাশ্যে দেশিয় ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাকে ও আমার সমর্থকদের উপর একাধিকবার হামলা চালিয়েছে; বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। আর সেই সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে খলিলকে।

আওয়ামী প্রার্থীর বক্তব্য – 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র রকিবুল হক ছানা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাতের অন্ধকারে বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে আমাদের উপর হামলা করা চেষ্টা করেছিল; কিন্তু তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

তিনি বলেন, সকল গোপালপুরবাসী এক ও অভিন্ন হয়ে যেভাবে গোপালপুরকে উন্নতির দিকে ধাবিত করা যায়; সেই লক্ষ্য কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরাও চাই গোপালপুরে একটি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক।

সকল সব হিসাব-নিকাশ আর জল্পনা-কল্পনা শেষ হচ্ছে আজ। সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে উন্মুখ হয়ে আছে।

এদিকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ প্রশাসন। পৌরসভায় একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার মোতায়ন থাকবে।

এছাড়াও থাকবে পুলিশের মোবাইল টিম, ডিবির ভ্রাম্যমাণ টিম, স্ট্রাইকিং টিম, বিজিবি’র টিম নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।

উল্লেখ্য, নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ছাড়াও নয়টি ওয়ার্ডে ৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৪১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এই পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ৪০ হাজার ৭৩৫ জন; তন্মধ্যে পুরুষ ২০ হাজার ১০২ ও নারী ভোটার ২০ হাজার ৬৩৩ জন। মোট ১৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে।’ সম্পাদনা – অলক কুমার