টাঙ্গাইলে ঠান্ডা ও ডায়রিয়া রোগীর চাপে হাসপাতালে খোলা হয়েছে আলাদা ওয়ার্ড

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালে শিশু ওয়ার্ড

স্বাস্থ্য প্রতিবেদক : চলমান শীতের প্রকোপে টাঙ্গাইলে আশংকাজনক হারে বেড়েছে ঠান্ডা ও ডায়রিয়াজনিত রোগের প্রকোপ।

হাসপাতালে আগত রোগীর মধ্যে ৮০ শতাংশই ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত।

গত কয়েকদিনে চাপ বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরও।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ১০০টি আসন নিয়ে আলাদা ওয়ার্ড খোলার পরও রোগীর চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তারদের।

সরেজমিনে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় সিটে রোগীর সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে চিকিকৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে; অক্সিজেন দিয়ে অনেক শিশুকে রাখা হয়েছে।

হাসপাতালের পুরো ওয়ার্ডটি রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড়ে পা রাখার জায়গা নেই। সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে রোগীরা আসছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকস এবং দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মিলে ৪০১ জনের মধ্যে ৩২৮ জন কর্মরত রয়েছেন।

হাসপাতালের ৭৩টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ৫৮ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন ৪১ জন। ২৩৯ নার্সের স্থলে আছেন ২৩৩ জন। ৩২ জন প্যারামেডিকসের স্থলে আছেন ১৩ জন।

এছাড়া ৭২ জন দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর স্থলে রয়েছেন ৪১ জন।

ঘাটাইল থেকে আসা আগত রেহানা বেগম, বলেন আমার নাতির বয়স ২২ দিন। ঠান্ডায় শ্বাস নিতে পারছেনা; তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মোতালেব হোসেন হোসেন বলেন, আমার ছেলে ইয়ামিনকে ঠান্ডার সমস্যার কারনে চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।

হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের মতামত ও পরামর্শ –

জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. লুৎফর রহমান আজাদ বলেন, হাসপাতালে শিশু রোগীর আসন সংখ্যা ২৫টি।

মঙ্গলবার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী শিশু ওয়ার্ডে ৯১ জন এবং ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৬৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

সোমবার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৮ জন। এর মধ্যে এক বছরের কম বয়সী ৪২ জন ও বেশি ১৬ জন।

আসন সংখ্যার ৩ গুণ শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। শুক্রবার এ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৫ এবং শনিবার ৬৯ জন।

ভর্তিকৃত শিশু রোগীদের ৮০ ভাগই ঠান্ডাজনিত নানা সমস্যায় আক্রান্ত।

এছাড়া ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আশংকাজনক হারে বাড়ছে রোগীর পরিমাণ। সোমবার এ ওয়ার্ডে রোগীরসংখ্যা ৭৫ জন; তবে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।

তিনি আরো জানান, মেডিসিন বিভাগের ১০০টি আসন মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করে আলাদা ওয়ার্ড করা হলেও আসনগুলো লিখিতভাবে স্থানান্তর করা হয়নি।

কেবল রোগীর চাপ কমাতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই আসনগুলোর রোগীদের চিকিৎসাসহ সব সুযোগ-সুবিধা জেনারেল হাসপাতাল দিচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক খন্দকার সাদিকুর রহমান জানান, তীব্র শীতের কারণে শিশুর নিউমোনিয়া ও বয়স্করা অ্যাজমায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

হাসপাতালে রোগীর চাপ প্রায় চার গুণ বেড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।

ক্রমাগত রোগীর চাপে রোববার (৮ জানুয়ারি) থেকে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। সম্পাদনা – অলক কুমার