বাসাইলে এসিল্যান্ড ও তার পরিবারকে সর্বহারা পার্টি নেতার হুমকি!

বাসাইল সংবাদদাতা : পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির পরিচয় দিয়ে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফজলে এলাহী ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় এসিল্যান্ড তার পরিবারকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ বিষয়ে এসিল্যান্ড মো. ফজলে এলাহী সোমবার (৫ অক্টোবর) বাসাইল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

জানা যায়, সোমবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফজলে এলাহীকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে সর্বহারা পার্টির প্রধান মহিউদ্দিন (০১৮২৬৭৫০৮৬৬) এই নম্বর থেকে মোবাইল করেন।

এসময় পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির প্রধান মহিউদ্দিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফজলে এলাহীকে বলেন, আমি জনযুদ্ধ এম-এর প্রধান সিকদার মহিউদ্দিন বলছি।

আমি এতদিন বাংলাদেশের বাইরে ছিলাম। চাঞ্চল্যকর পুলিশ মার্ডার মামলা মূখ্য আসামী আমি।

বেশ কিছুদিন হয় বাংলাদেশে এসেছি, দলের হেড কমান্ডের নির্দেশে দেশে ফেরার পথে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে গুলাগুলি হয়।

সেসময় আমাদের কয়েকজনকর্মী নিহত এবং কিছু আহত হয়।

আহতদের চিকিৎসার জন্য আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করতে হবে।

এসিল্যান্ড মো. ফজলে এলাহী টাকা দিতে অসম্মতি জানালে, মহিউদ্দিন বলেন- এই এসিল্যান্ড, আপনি পুলিশকে জানান, ওরা যদি পারে আপনাকে সেভ করবে তাহলে করুক।

আর আামার নেতাকর্মী যদি পারে তোকে চ্যালেঞ্জ করে টাকা ওঠাবে।

আপনি আমার সাথে চ্যালেঞ্জ করছেন? তাই না।

এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন বলেন, এই এসিল্যান্ড তুই কিন্তু যথারীতি প্রথমেই ফাউল করছিস।

এই সর্বহারা কি জিনিস তুই টাঙ্গাইলের মাটিতে বুঝতে পারবি।

এই টাকার জন্য তুই তোর পরিবারকে হারাবি, আমি সেটা চাই না। আমি বলছি টাকা তোর দিতেই হবে।

টাকা না দিলে আমার পোলাপান তোর পরিবারকে নিরবংশ করতে বাধ্য হবো।

এ সময় মহিউদ্দিন অশালীন ভাষায় ব্যবহার করে বলে যে, তুই তোর পরিবারকে পারলে সেভ কর। মেরে জঙ্গলে রেখে দেবো।

তুমি এসিল্যান্ড হও আর ডিসি হও এগুলোর পাত্তা দেওয়ার সময় আমার নেই।’

বাসাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফজলে এলাহী বলেন –

সর্বহারা পার্টির প্রধান সিকদার মহিউদ্দিন আমার ব্যক্তিগত মোবাইলে কল করে অনির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা দাবি করেন।

টাকা দিতে অসম্মতি জানালে তিনি আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

পরে এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমি এখন আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুশাসন অনুযায়ী ২০৪১ সালের সুখী, সম্মৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ গড়তে মাঠ প্রশাসনের সদস্যগণ বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

কাজ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে- আমাদের কর্মকর্তাগণ বিশেষ করে উপজেলা নির্র্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)গণ বিভিন্ন বাঁধা, হুমকি ও শারীরিক আঘাতের শিকার হচ্ছেন।

ঘোড়াঘাটের ঘটনা এরই একটি জলন্ত উদাহারণ।

তিনি মনে করেন দেশের সকল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও তাদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছে।

সরকারের এই চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডকে নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে নিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি)গণের সার্বক্ষণিক শারীরিক নিরাপত্তা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।

কারণ বিগত কয়েক মাসের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে এমনই প্রতীয়মান হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা প্রকাশ করি- আইন প্রয়োগকারী সংস্থা স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এই দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে।’

বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার স্বপ্না বলেন, ‘এঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এঘটনায় সাধারণ জিডি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’