টাঙ্গাইলে জাহাঙ্গীর আলমের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার ও এলাকাবাসী। রবিবার সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনের আয়োজন করে তারা। এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের ভ‚ঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রাম থেকে মো. জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান বলেন, ভ‚ঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রাম থেকে মো. জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্ত্রী লাবনী বেগমের পরকীয়ার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে স্বামী জাহাঙ্গীর আলম আত্মহত্যা করেছে। এমন প্রচারণার প্রতিবাদ করে বলেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাত ৮টা ৪৪ মিনিট থেকে জাহাঙ্গীর তার মায়ের সাথে ৮ মিনিট ১৮ সেকেন্ড কথা বলেন। ফোনালাপের ভাষ্যে জাহাঙ্গীরের পরিবার অভিযোগ করেছে সেদিন জাহাঙ্গীরকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা হচ্ছে সেটা অনুমান করেই ফোন করেছিল জাহাঙ্গীর। তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হচ্ছে।
বক্তব্যে আরও বলেন, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী লাভলী বেগমের সাথে একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আমিনুর (বাবু)’র সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো। সেই অবৈধ সম্পর্ক বিচ্ছেদ করার জন্য এলাকাবাসী ৪/৫ বার শালিশী বৈঠক করেও সমাধান করতে পারেনি। সবশেষে আমিনুরকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করে শালিশী বৈঠক। লাভলীকে ছেড়ে দুরে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। এরপরও সে এলাকা না ছেড়ে সম্পর্কে অটুট থাকে। প্রায়ই আমিনুর জাহাঙ্গীরকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল। তিনচার মাস আগে আমিনুরের সাথে লাভলী বেগম পালিয়ে বগুড়া গিয়ে এক দেড়মাস আগে ফিরিয়ে আনে। ৯ ফেব্রুয়ারি লাবলী বেগম মিথ্যে অজুহাতে জরুরী খবর দিয়ে গোপালপুর থেকে ভ‚ঞাপুরে নেয়। রাতে বুঝতে পারেন তাকে তার স্ত্রী লোকজন নিয়ে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে। এসময় পালাতে না পেরে মায়ের সাথে ফোনালাপ করেন। পরিবারে অভিযোগ তার স্ত্রী লোকজন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীরকে হত্যা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জাহাঙ্গীরের ভাই আবু সাঈদ, নিহতের প্রতিবেশী আব্দুল হালিম খান, মো. আব্দুল কদ্দুস খান, মনিরুজ্জামানসহ এলাকাবাসী। লাভলী বেগম রাজাপুর গ্রামের হায়দার আলীর মেয়ে।
প্রসঙ্গত: ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ভূঞাপুর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে জাহাঙ্গীরের শশুরবাড়ী এলাকা থেকে পুলিশ নিহতের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত জাহাঙ্গীর গোপালপুর উপজেলার উড়িয়াবাড়ি গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে। জাহাঙ্গীর আলমের সাথে ভূঞাপুর উপজেলার অজুর্না ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের হায়দার আলীর মেয়ে লাভলীর বিয়ে হয়।